তারুণ্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
তারুণ্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পেয়ারা চাষে লাখপতি মুরাদনগরের কাশেম

পেয়ারা চাষে লাখপতি মুরাদনগরের কাশেম

পেয়ারা চাষে লাখপতি মুরাদনগরের কাশেম

মমিনুল ইসলাম মোল্লা
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল পেয়ারা। প্রতি দিন একটি পেয়ারা খেলে কখনও সিভিট জাতীয় টেবলেট কিনে খেতে হবেনা।কাজী পেয়ারা চাষ কওে লাখপতি হয়েছেন কুমিল্লার মুরাদনগরের মেটংঘরের আবুল কাশেম।মেটংঘর বাস স্টেশনে তার সাথে আমাদে প্রতিনিধির কথা হয়।কএখানেই তিনি পেয়ারা বিক্রি করেন।তাকে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী দিপু আক্তার ।আবুল কাশেম জানান, এইচএসসি পাশ করেও তিনি কোন চাকুরির পেছনে দৌড়াননি।পৈত্রিক পেশা কৃষিকে ভালবেসে গ্রামেই থেকে যান।কোম্পানিগঞ্জ –নবীনগর রোডের কোড়েরপাড় ব্রিজের ইত্তর পাশে ব্রাক অফিসের নিকটেই তার বাড়ি।তার পিতার নাম মরহুম কফিল উদ্দিন।তার এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি পেয়ারা চাষে মনোনিবেশ করেন।পেয়ারা চাষে দুঃখ নাশে এটি কশেম মিয়ার বিশ্বাস হচ্ছিলনা।
বন্ধুটি বল্ল-এটি দেশি পেয়ারা নয়।এ পেয়ারার নাম কাজি পেয়ারা।কেউ কেউ অবশ্য বলেন কিজি পেয়ারা।কারণ এটি কোন কোন সময় ১ কেজি পর্যন্ত হতে দেখা যায়।বন্ধুর পরামর্শে তিনি ৩০ শতক জমির উপওে একটি পুকুর কাটলেন।পুকুওে হবে মাছ চাষ ,বোরোর সময় হবে বোরো চাষ ।এক সাথে ধান , মাছ আর পেয়ারা পাওয়ার জন্য তিনি একটি প্রকল্প হাতে নেন।পুকুরের পাড়গুলো স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশী প্রশস্ত করলেন।২০০৮ সালের জুন মাসে তিনি স্থানীয়ভাবে ৩০০ চারা সংগ্রহ করলেন।বন্ধুর পরামর্শে তিনি ১৩ ফুট দূওে দূওে একটি কওে চারা লাগালেন।প্রতিটি গর্তে ১০/১২ কেজি গোবর সার ,১কেজি সরিষার খৈল দিয়ে গর্তে মুখ বন্ধ কওে দিল।৮/১০ দিন পর সে গর্তে ১টি কওে চারা লাগালেন।তারপর প্রতিটি চারা খুটির সাথে বেঁধে দিলেন
কলমের চারা লাগানোর কারণে তিনি প্রথম বছরেই ফল পেলেন।কাজি পেয়ারা গাছ থেকে বছওে ৩ বার ফল পাওয়া যায়।ফেব্রæয়ারী, জুলাই ও ডিসেম্বও মাসে তিনি পেয়ারা বিক্রি করেন।২ বছর বয়সের একটি গাছে গড়ে ১২৮টি পেয়ারা বা ৫৩ কেজি পেয়ারা ধরে।২৫ টাকা কেজি ধওে এ পেয়ারা দাম হয় ৪ লক্ষ টাকা।সে হিসেবে ৩ বছওে কাসেম মিয়ার ৩০০ গাছে প্রতি বছর ৪০০ মন পেয়ারা ধরে।২৫ টাকা কেজি দওে এ পেয়ারার দাম হয় ৪ লক্ষ টাকা।সে হিসেবে ৩ বছওে তিনি আয় করেছেন১২ লক্ষ টাকা।তবে কাশেস মিয়া বাধা দিয়ে বল্লেন-ক্যালকুলেটরের বোতাম টিপে হিসেব করলেই হবেনকারণ গাছের পাতপ ও কান্ড এানথ্রোকনোজ রোগে , কচি ডাল ডাইবেক রোগে এবং পেয়ারাগুলো মাছি পোকায় আক্রান্ত হলে উৎপাদন অনেক কমে যায়।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, ডাল বাঁকানো পদ্ধতি ব্যবহার করলে কাজি পেয়ারায় আরো ৮/১০ গুণ বেশী ফল পাওয়া যায়।ডাল বাঁকানোর ১০/১৫ দিন আগে গাছের গোড়ায় সার ও পানি দিতে হয়।ডালের আগার ১ হাতের মধ্যে থাকা পাতা ,ফুল , ও ফল রেখে বাকী সবগুলো ছেঁটে দিতে হবে ।ডাল বাঁকানোর সময় ৫৫/৬০ দিনের মধ্যে ফুল হয়।এপদ্ধতিতে সারা বছর ফল পাওয়া যায়।কাশেম মিয়া বলেন ৩ বছর পর পর নতুন কওে গাছ লাগাতে হয়।তাই তিনি এবছর আবার নতুন কওে গাছ লাগাবেন।তার কাজে তার স্ত্রী দিপু আক্তার বাদেও তার স্কুল পড়–য়া ছেলে রিয়াজ ও রিয়াদ সহযোগীতা করেন।
লেখকঃপ্রভাষক ও সাংবাদিক ,কুমিল্লা।সধসরহসড়ষষধয@ুধযড়ড়.পড়স



রসে ভরা দেশী  ফলের নিমন্ত্রণ

রসে ভরা দেশী ফলের নিমন্ত্রণ

রসে ভরা দেশী  ফলের নিমন্ত্রণ

গাড়ী চলার জন্য যেমন জ্বালানী প্রয়োজন তেমনি আমাদের দেহের জন্য খাদ্য। তবে সামনে যা পেলাম তাই খেলাম এমনটি হলে চলবে না। আমারে শরীরে ক্ষয় পূরণ বৃদ্ধি সাধন ও রোগ প্রতিরোধ এর জন্য যতটুকু প্রয়োজন আমরা ততটুকু খাই। অতিরিক্ত খাদ্য চর্বি হিসাবে আমাদের দেহে জমা হয়ে সমষ্যার সৃষ্টি করে। আমরা ভাত, নাস্তা ঝাড়াও প্রতিদিন ফল খেয়ে থাকি। এখন দেশী ফলের ভরা মৌসুম, তাই বিদেশী আপেল, আঙ্গুর, না খেয়ে দেশী আম কাঠাল খাওয়া ভাল নয় কি ?
কবি বলেছেন - আম পাকে বৈশাখে, কূল পাকে পাকে  ফাল্গুনে। মূলত সারা বছরই আমাদের দেশের কম-বেশী ফল পাওয়া যায়। তবে গ্রীষ্মে পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশী। গত বছর ঢাকায় আয়োজিত একটি ফল মেলায় একটি স্থান পেয়েছিল ৪২ টি ফল। তবে সারাদেশে ৪২ টি না পাওয়া না গেলেও আম, জাম, জামরুল, কদবেল, শরীফা, আতা, কাঠাঁল, কলা, আনারস ও লিচু সব যায়গায় ই কম-বেশী পাওয়া যায়।
আমাদের দেশে প্রায় ১০০ প্রজাতির আম পাওয়া যায়। ক’টার নামই বা আমরা জানি ? তবে সব প্রজাতীর আম খেতে সুস্বাদু নয় তবে দোকানে দেখলেই জীভে পানি এসে যায়। এমন কয়েকটি প্রজাতি হচ্ছে গোলাপ খায় বোম্বাই, ল্যাংড়া, ফজলী, খিসাপতি, হিমাগার, গোলাপজাম, মোহনভোগ, কিষাণভোগ, শাহী পছন্দ, বেগমপছন্দ। 
১০০ গ্রাম ওজনের আমে ৭৪ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। শুধুমাত্র মিষ্টি ফল হিসেবেই হয়তো আমরা আমকে পছন্দ করে খাদ্য তালিকায় রাখি। কিন্তু আমের গুনাগুন সম্পর্কে অথবা ্ঔষধী গুন সম্পর্কে জানি না। আমকে বায়ু নাশক শুত্রæ ও বলকারক রুচিজনক ও অগ্নিবর্দ্ধক হিসেবেই ডাক্তারগণ চিহ্নিত করে থাকে। তাই এ মৌসুমে আমাদের বেশি করে আম খাওয়া উচিত।
আমের পরেই আসে কাঁঠালের কথা। এটি আমাদের জাতীয় ফল। কাঠাঁল শব্দটি কাঁটা+আল থেকে এসেছে। কাঁঠাল সাধারনত দুই প্রকার। চাউলা ও খাজা। উভয় প্রকার কাঠাঁলেই আছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন ও শর্করা। ১০০ গ্রাম কাঠাঁলে ৮৮ ক্যালরী শক্তি পাওয়া যায়। কাঠাঁল গুরুপাক, গুপ্তিবার, বায়ু ও পিত্তহর, শুক্র ও বলকারক হিসেবে পরিচিত।
কাঠালের ডাল ও সুমষ্টি জাত হচে।চ খাজা। এজাতীয় কাঠাঁল অত্যন্ত সস্থা, পাকা অবস্থায়ও এদের বর্ণ মসৃণ থাকে এদের কাষসমূহ বৃহদাকৃতি ও শুষ্কভাবাপন্ন হয়। এ জাতীয় কাঠাঁলের বিচি অপেক্ষাকৃত ছোট হয়।
বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় গিা জাতের কাঠাল জন্মে। এজাতীয় কাঠাঁলের গা বন্ধুর। পাকা কাঠাল লালচে বর্ণের হয়। কোষ বসপূর্ণ হয় এবং অপেক্ষাকৃত অধিক মিষ্ট হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সব জায়গায় কম বেশী কাঠাঁল হলেও গাজীপুর ও টাঙ্গাইল এর জন্য প্রসিদ্ধ। বাংলাদেশ ছাড়াও কাঠাঁল জন্মে ভারত, বার্মা ও ব্রাজিল।
আনারস গ্রীষ্মকালীন মিষ্ট ফল। আনারসের আদি জন্মস্থান আমেরিকাতে হলেও বাংলাদেশে এটি খুবই জনপ্রিয়। বিশেষ রোগীর পথ্য হিসেবে এটি বিশেষভাবে পরিচিত। বর্তমানে আমেরিকা বাদেও ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, পোটোরিকা, কিউবা ও ফরসোজয়া এ ফল উৎপাদিত হয়।
আনারস একটি সুস্বাদু রসাল ফল। এর খাদ্যমান অনেক বেশি। টাটকা আনারসে হজমে সহায়ক ব্রাসিলিন নামক জারক রস বিদমান। আনারস হতে স্কোয়াশ সিরাপ, জ্যাম, ভিনিগার, সাইট্রিক এসিড, ক্যালসিয়াম সাইট্রেট, একোহল প্রভৃতি পাওয়া যায়। রাঙ্গামাটি, খাগরাছড়ি, বান্দরবন, সিলেট, চট্টগ্রাম, মধুপুর ও কুমিল্লায় আনারস বেশী জন্মে।
গরমের সময় বাঙ্গালীকে ঠান্ডা করার জন্য বর্তমান বাজারে পাওয়া যায় রসালো তরমুজ। যদিও ৯০% পানিতে ভরপুর তরমুজে খাদ্যাপদান কম নেই। তরমুজের শরবত খুবই সুস্বাদু। তরমুজ ভালো ফলে নাটোর, টেকনাফ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে।
এছাড়া গরমে আরাম পাবেন বাঙ্গির শরবত খেলে। বিশেষ করে বেলে বাঙ্গিতে গুল মিশিয়ে খেলে আপনার সারা জীবন মনে থাকবে। তবে আঠালো বাঙ্গি কম দামে পেলেও কেযে মজা পাওয়া যায় না। 
গ্রীষ্মের আরেকটি ফল হচ্ছে বলে। বেলের শরবত সকল বয়সের মানুষের প্রিয় পানীয়। বাজারে প্রচলিত কোমল পানীয়ের তুলনায় বেলের শরবত হাজারগুনে ভাল। প্রবাদ আছে, তেলা মাতায় ঢাল তেল শুকনা মাথায় ভাঙ্গ বেল। আবার কেউ বলেন- ন্যাড়া কখনো বেল তলায় যায় ? না আপনাকে বেলতলায় যেতে হবে না। বাজার থেকে ১০/১২ টাকায় একটি বেল কিনতে পারবেন।
তালের শাসও ছেলে-বুড়োদের প্রিয় খাবার। তালের পিঠা খাওয়ার সুযোগ না হলেও রাস্তার পারে বসা তালের ডাব বিক্রেতার নিকট থেকে ৫/৮ টাকায় একটি তালের ডাব কিনে এর শাস খেতে পারবেন অতি সহজেই। এ সময় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পেয়ারাও পাবেন। সুতরাং বিদেশী ফল আপেল, আঙ্গুর, কমলা কিংবা নাশপতির দিকে হাত না বাড়িয়ে দেশীয় ফল খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
ডাক্তারদের মতে একজন সুস্থ লোকের দৈনিক ১১৫ গ্রাম ফল গ্রহন করা প্রয়োজন। পরিসংখ্যান হতে আমরা গড়ে মাত্র ৩৮ গ্রাম ফল খাচ্ছি। আমাদের দেহে ফলের চাহিদা পূরণ করতে দেশীয় ফলের কোন বিকল্প নেই।