কলা বাগানের আয়ে চলছে মুরাদনগরের একটি মাদ্রাসা


কুরআন নাজিলের মাস রমজান হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘কুরআনের (শুদ্ধভাবে পাঠকারী পানির মত হিফযকারী পাকা) হাফেয মহাসস্মমানিত পুণ্যবান লিপিকার (ফেরেস্তাবর্গের) সঙ্গী হবে আর যে ব্যক্তি (পাকা হিফয না থাকার কারনে) কুরআন পাঠেওঁ-ওঁ করে এবং পড়তে কষ্টবোধ করে, তার জন্য রয়েছে দুটি সওয়াব (একটি তেলাওয়াত দ্বিতীয়টি কষ্টের দরণ) (বুখারী ৪৯৩৭, মুসলিম ৭৯৮) কুরআন মুখস্ত করারর জন্য আমাদের দেশে হাফেজি মাদ্রাসা চালু রয়েছে তবে অধিকাংশ মাদ্রাসাই জনসাধারণের দান-সদকা এর উপর নির্ভর করে পরিচালিত হচ্ছে এর মধ্যে ব্যাতিক্রম কুমিল্লার মুরাদনগরের ধামঘর উত্তর পাড়ার ফয়জুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা এতিম খানা
 নিজেদের উৎপাদিত কলা বাগানের আয় দিয়েই চলছে মাদ্রাসাLink Here://wwwmaminmollahblogcom.blogspot.com/2020/01/blog-post_378.htmlমুরাদনগরের কোম্পানিগঞ্জ  বাজারের দক্ষিণ পাশে গোমতী ব্রিজ থেকে পশ্চিম দিকে কিলোমিটার গেলেই মাদ্রাসাটি চোখে পড়বে ২০১০ সালের শেষের দিকে জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফয়জুল উলুম কমপ্লেক্সের সূচনা হয় ধীরে ধীরে গড়ে উঠে হাফেজি মাদ্রাসা, কবরস্থান ঈদগাহ, অচিরেই চালু হচ্ছে এতিমখানা লিল্লাহ বোর্ডিং মাদ্রাসা মসজিদ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী আঃ মালেক তিনি মাদ্রাসার কর্মকান্ড সার্বিকভাবে তত্তাবধান করেন
               শহরের মসজিদ -মাদ্রাসাগুলোর দোকান-পাটসহ  আয়ের বিভিন্ন  উৎস থাকে কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে তা  সম্ভব হয় না দেশের লক্ষ মসজিদ মাদ্রাসার অধিকাংশগুলোর  নামেই জমি বা পুকুর রয়েছে কিন্তু এগলোর সঠিক ব্যবহার হয় না মাদ্রাসার নামে যেটুকু জমি রয়েছে তার  সবটুকুই  তারা কাজে লাগাচ্ছেন প্রথম ১০ শতক জমিতে কলা গাছ লাগানো হয় পরবর্তীতে মাদ্রাসার পাশের ৩৫ শতক, পরবর্তীতে ৪২ শতক, জমিতে কলা চাষ করা হয়স্বনির্ভরতার জন্য মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ আবুল বাশারের নেতৃত্বে একদিন মাদ্রাসার জমিতে কলা চাষের পরিকল্পনা করা হয় কিন্তু কলা চাষ করা হবে কিভাবে ? যে জমির কথা বলা হচ্ছে, তা কোথাও কোথাও /১০ ফুট গভীর ইচ্ছে করলে অল্প পরিশ্রমেই সে জমিতে মাছ চাষ করা যায় কিন্তু মাছ চাষের আয় দিয়ে যাবতীয় খরচ চালানো সম্ভব নয় তাই সে জমি উঁচু করার জন্য পুকুর জমি থেকে উর্বর  মাটি ফেলা হয় গ্রামের স্বপন রায় নরসিংদীতে থাকেন তিনি বল্লেন তিনি কলা চাষে কারিগরি সহায়তা দেবেন রুহুল আমিন বল্লেন, তিনি এলাকার বেকার যুবকদের সহায়তায় কাজ করা সম্ভবতাঁর নেতৃত্বে  প্রথম ১৭টি চারা এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়  দেড় বছর আগে লাগানো বাগানটিতে ২৬০টি এবং / মাস বয়সী বাগানটিতে বর্তমানে গাছ রয়েছে ৩৬০ টি
               বাগানে রয়েছে উন্নত মানের সরফি, সমাই, (বাংলা ) আনাজি সাহেবী কলা সরফি কলার একটি ছড়ি গড়ে ৫০০, সমাই ৪৫০, আনাজি কলার হালি বিক্রি হয় ১৬ টাকা প্রতি শুক্রবার নামাজের পর কলা পাইকারি বিক্রি করা হয় বাগান পরিচর্যায় ব্যাস্ত হারুন মিয়া, দয়াল মিয়া,  হোসেন মিয়া একটি কলার ( বেগুনী রঙের) ঝোঁপের দিকে হাতের আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বল্লেন, এটি সাহেবী কলা এর চারা সৌদি আরব থেকে আনা হয়েছে বর্তমানে বিশেষ জাতের কলার প্রতিটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে হাফেজ হোসাইন আহমেদ জানান, বর্তমানে ২টি কক্ষে মোট ৫৫ জন ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তবে আরো ১টি কক্ষ বাড়ানো গেলে ভাল হতো মাদ্রাসার বয়স প্রায় বছর সময়ের মধ্যে আল আমিন মোঃ সাইদ হাফেজি সম্পন্ন করে বর্তমানে এখানে তারাবির নামাজ পড়াচ্ছেন বর্তমানে মাসে ৪০/৫০টি কলার ছড়ি বিক্রি করা যায় এছাড়া কলার মোচা, কলার চারা ইত্যাদিও বিক্রি করা যায় তবে কলার আটি বিক্রি হয় না এগুলো গরীব লোকেরা নিয়ে যায়  কৃষি বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তাগন মাঝে মাঝে তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেন মাদ্রাসার সভাপতি বলেন, “মাদ্রাসার ব্যায় মেটানোর ব্যাপারে আমাদেও ভাবতে হয়না তবে আমারা মসজিদের যে কাজটি হাতে নিয়েছি তাতে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হবে কাজে দ্বীনদার মুসলমান ভাইয়েরা এগিয়ে এলে মসজিদের কাজটা তাড়াতাড়ি শেষ করা যাবে  মাদ্রাসার কলাবাগানের দেখাদেখি নতুন করে হাবিবুর রহমান হেলালী ৫০ শতক, আঃ রশিদ ৪৫ শতক জমিতে কলা চাষ করেছেন  এক কথায় হাফেজ আবুল বাশারের কলা বাগান এলাকার কৃষকদের  মাঝে আশার আলো ছড়াচ্ছে এবং বেকার যুবকদেও উৎসাহিত করছে
লেখক: মমিনুল ইসলাম মোল্লা, প্রভাষক, ক্যাম্পেনার সিডিএলজি এবং ধর্মীয় গবেষক, কুমিল্লা, ২৫/০৭/২০১


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.