According to Sahih Akida, two rak'ats of Salat দুই রাকাত সালাত পড়ার সহিহ আকিদা মোতাবেক বিবরণ


প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর সালাত আদায় করা ফরজ । রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , “ তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবেই সালাত আদায় কর।
সালাতে দাঁড়ানো, রুকু, সেজদা ও বৈঠকসহ নির্দিষ্ট নিয়মে সকল কাজ করতে হয় । সালাতের দৈহিক কাজের নিয়মসহ আমরা দু রাকাত সালাতের কাজের বিবরণ জানব। 
  দাঁড়ানো : 
আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠচিত্তে দাঁড়িয়ে যাও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। কাতারে পরস্পরের মাঝের ফাঁকা বন্ধ করে কাঁধে কাঁধ, পায়ে পা মিলিয়ে কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর কথা রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন।সূত্র (মিশকাতুল মাসাবীহ - পর্ব-৪ )। সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় চোখ থাকবে সেজদার যায়গায়। স্বলাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নযর রাখা  সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ,“যারা তাদের স্বলাতে আসমানের দিকে দৃষ্টি উঠায়, তারা অবশ্যই বিরত থাকবে, অথব তাদের দৃষ্টি হরণ করা হবে”। মুসলিম: (৪২৯)

 কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানোঃ
  মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ঘর সম্মুখে রেখে দাঁড়াবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِي ٱلسَّمَآءِۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبۡلَة  تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَيۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ ١٤٤﴾[البقرة:144]
 “আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। সূরা বাকারা: (১৪৪) মুসল্লিগণ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যে নফল অথবা ফরয স্বলাত আদায়ের ইচ্ছা করেছে, অন্তরে তার নিয়ত করবে ও মুখে الله أكبر “আল্লাহু আকবার” বলবে, এবং সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রেখে হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে উভয় হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে।রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যখন তুমি স্বলাতের জন্য দাঁড়াও, তাকবির বল”। বুখারি: (৭৯৩), মুসলিম: (৩৯৭)
 হাত বাঁধাঃ 
উভয় হাত নিচে নামিয়ে বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের পিঠ-কব্জি-বাহুর উপর রাখা। ওয়ায়েল ইব্ন হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমিরাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে স্বলাত আদায় করেছি, তিনি বুকের উপর বাম হাতের উপরে ডান হাত রেখেছেন”। সহিহ ইব্ন খুজাইমাহ: (১/২৪৩),এরপর সানা পড়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করুন। সুরা ফাতিহা শেষ হলে একটি সুরা অথবা তিনটি ছোট আয়াত, যা কমপক্ষে লম্বা একটি আয়াতের সমতুল্য হয় পড়ুন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৯৫) 
রুকু করাঃ
আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, স্বলাত আরম্ভ করার সময় রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকুর জন্য তাকবির বলতেন ও রুকু থেকে মাথা উঠাতেন অনুরূপ হাত উঠাতেন, তবে সেজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তিনি অনুরূপ করতেন না। সূত্রঃ বুখারি, মিশকাত হাদিস ৭৯২, রুকু থেকে উঠে কওমার দোয়া শেষে সিজদায় লুটিয়ে পড়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখার ব্যাপারে অfবু হোরায়রা রাঃ থেকে একটি সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সূত্রঃ অfবু দাউদ হাদিস ৮৪০, মিশকাত হাদিছ/৮৯৯ অনচ্ছেদ ১৪
সেজদা করাঃ
 সিজদা করার সময় বেশী বেশী দো‘আ পড়বে। সিজদায় কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়বে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪২)এ সময় দু’হাত ক্বিবলামুখী করে মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। হাঁটুতে বা মাটিতে ঠেস দিবে না। সিজদা লম্বা হবে ও পিঠ সোজা থাকবে। যেন নীচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে।হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী রাখবে। আবু হুমাইদ সায়েদি থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে:
«فإذا سجد وضع يديه غير مفترشٍ ولا قابضهما، واستقبل بأطراف أصابع رجليه القبلة»
“যখন সেজদা করবে উভয় হাতকে বিছিয়ে রাখবে না, আবার মুষ্টিবদ্ধ করেও রাখবে না, পাযের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী করে রাখবে”। হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে কিবলামুখী রাখবে।বুখারি: (৮২৮)  
দুই সিজদার মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করাঃ
তাকবির বলে সেজদা থেকে মাথা উঠাবে । সিজদা থেকে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে ও ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে। এ সময় স্থিরভাবে বসে দো‘আ পড়বে। অতঃপর ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে ও দো‘আ পড়বে। যেমন কমপক্ষে ‘রবিবগফিরলী’ ২ বার বলা।[ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: “তিনি বাম পা বিছিয়ে রাখতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন”। মুসলিম: (৪৯৮) উভয় হাত রানের উপর রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্ন জুবায়ের তার পিতা থেকে মারফূ সনদে বর্ণনা করেন: “নবী (ﷺ) যখন বসতেন তখন তিনি দো‘আ করতেন এবং ডান হাত ডান রানের উপর ও বাম হাত বাম রানের রাখতেন”।মুসলিম: ১১৩-(৫৭৯)  অথবা উভয় হাত হাটুর উপর রাখবে। 
তারপর আল্লাহ আকবর বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে।দ্বিতীয় সিজদা শেষে তাকবির বলে মাথা উঠাবে এবং সামান্য সময় বসবে, যেটাকে জালসায়ে ইস্তেরাহা বলে। এতে কোন জিকির ও দোয়া  নেই।তারপর মাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়াবে।
তাশাহুদঃ
দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে একবারই তাশাহুদ পড়তে হয়।এসময়  বসার নিয়ম হচ্ছে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসবে, ডান পা খাড়া রাখবে এবং আঙ্গুলগুলো কিবলার দিকে রাখবে। বৈঠকের সময় বাম হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাঁটুর প্রান্ত বরাবর ক্বিবলামুখী ও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে এবং ডান হাত ৫৩-এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ রেখে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত শাহাদাত অঙ্গুলি নাড়িয়ে ইশারা করতে থাকবে। মুছল্লীর চোখ ইশারার বাইরে যাবে না।   ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ার পরে দরূদ, দো‘আয়ে মাছূরাহ ও সম্ভব হ’লে বেশী বেশী করে অন্য দো‘আ পড়বে। 
৩ বা ৪ রাকাত সালাত পড়ার নিয়মঃ
স্বলাত যদি তিন রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন মাগরিব অথবা চার রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন জোহর, আসর ও এশা। তাহলে দুই রাকাত পড়ার পর শুধু  তাশাহুদ পড়বে, পা ও হাটুর সম্মুখভাগ এবং রানের উপর ভর দিয়ে তাকবির বলে দাঁড়াবে,আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমরের হাদিসে আছে: “যখন দু’রাকাত থেকে উঠবে উভয় হাত উঠাবে”। বুখারি: (৭৩৯),
শেষ বৈঠকঃ 
৩ বা ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাজে  দ্বিতীয় তাশাহুদে তাওয়াররুক করে বসবে। আবু হুমাইদ সায়েদির হাদিসে আছে: “যখন দ্বিতীয় রাকাতে বসবে, তখন বাম পায়ের উপর বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে। যখন শেষ রাকাতে বসবে, বাম পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া রাখবে ও নিতম্বের উপর বসবে”। বুখারি: (৮২৮) এটাই তাওয়াররুক বসা। এখানে পড়ার নিয়ম ২ রাকাত বিশিষ্ট নামারে শেষ বৈঠকের মত।
সালাম ফিরানোঃ
আমের ইব্ন সাদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখতাম, তিনি ডানে ও বামে আছ্ছালামু অঅলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরাতেন, এমন কি আমি তার গালের শুভ্রতা দেখতে পেতাম”। মুসলিম: (৫৮২)
জামায়াতে নামাজ পড়ার সময় মুক্তাদি ইমামের আনুগত্য করবে।আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন “আনুগত্য করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যখন সে দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় করে, তোমরাও দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় কর, যখন সে রুকু করে তোমরা রুকু কর, যখন সে উঠে তোমরাও উঠ, যখন সে সেজদা করে তোমরাও সেজদা কর, যখন সে বলে: سمع الله لمن حمده তোমরা বল: বুখারি: (৭৮৯), মুসলিম: (৩৯২)
শেষ কথাঃ
কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হ’লে বসে বা শুয়ে ইশারায় স্বলাত আদায় করবে।কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় স্বলাত মাফ নেই।বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮ 
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক, লেখক ও প্রভাষক।





দুই রাকাত সালাত পড়ার সহিহ আকিদা মোতাবেক  বিবরণ
প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর সালাত আদায় করা ফরজ । রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , “ তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবেই সালাত আদায় কর। সালাতে দাঁড়ানো, রুকু, সেজদা ও বৈঠকসহ নির্দিষ্ট নিয়মে সকল কাজ করতে হয় । সালাতের দৈহিক কাজের নিয়মসহ আমরা দু রাকাত সালাতের কাজের বিবরণ জানব। 
  দাঁড়ানো : 
আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠচিত্তে দাঁড়িয়ে যাও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। কাতারে পরস্পরের মাঝের ফাঁকা বন্ধ করে কাঁধে কাঁধ, পায়ে পা মিলিয়ে কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর কথা রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন।সূত্র (মিশকাতুল মাসাবীহ - পর্ব-৪ )। সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় চোখ থাকবে সেজদার যায়গায়। স্বলাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নযর রাখা  সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ,“যারা তাদের স্বলাতে আসমানের দিকে দৃষ্টি উঠায়, তারা অবশ্যই বিরত থাকবে, অথব তাদের দৃষ্টি হরণ করা হবে”। মুসলিম: (৪২৯)

 কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানোঃ
  মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ঘর সম্মুখে রেখে দাঁড়াবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِي ٱلسَّمَآءِۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبۡلَة  تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَيۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ ١٤٤﴾[البقرة:144]
 “আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। সূরা বাকারা: (১৪৪) মুসল্লিগণ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যে নফল অথবা ফরয স্বলাত আদায়ের ইচ্ছা করেছে, অন্তরে তার নিয়ত করবে ও মুখে الله أكبر “আল্লাহু আকবার” বলবে, এবং সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রেখে হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে উভয় হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে।রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যখন তুমি স্বলাতের জন্য দাঁড়াও, তাকবির বল”। বুখারি: (৭৯৩), মুসলিম: (৩৯৭)
 হাত বাঁধাঃ 
উভয় হাত নিচে নামিয়ে বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের পিঠ-কব্জি-বাহুর উপর রাখা। ওয়ায়েল ইব্ন হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমিরাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে স্বলাত আদায় করেছি, তিনি বুকের উপর বাম হাতের উপরে ডান হাত রেখেছেন”। সহিহ ইব্ন খুজাইমাহ: (১/২৪৩),এরপর সানা পড়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করুন। সুরা ফাতিহা শেষ হলে একটি সুরা অথবা তিনটি ছোট আয়াত, যা কমপক্ষে লম্বা একটি আয়াতের সমতুল্য হয় পড়ুন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৯৫) 
রুকু করাঃ
আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, স্বলাত আরম্ভ করার সময় রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকুর জন্য তাকবির বলতেন ও রুকু থেকে মাথা উঠাতেন অনুরূপ হাত উঠাতেন, তবে সেজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তিনি অনুরূপ করতেন না। সূত্রঃ বুখারি, মিশকাত হাদিস ৭৯২, রুকু থেকে উঠে কওমার দোয়া শেষে সিজদায় লুটিয়ে পড়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখার ব্যাপারে অfবু হোরায়রা রাঃ থেকে একটি সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সূত্রঃ অfবু দাউদ হাদিস ৮৪০, মিশকাত হাদিছ/৮৯৯ অনচ্ছেদ ১৪
সেজদা করাঃ
 সিজদা করার সময় বেশী বেশী দো‘আ পড়বে। সিজদায় কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়বে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪২)এ সময় দু’হাত ক্বিবলামুখী করে মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। হাঁটুতে বা মাটিতে ঠেস দিবে না। সিজদা লম্বা হবে ও পিঠ সোজা থাকবে। যেন নীচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে।হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী রাখবে। আবু হুমাইদ সায়েদি থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে:
«فإذا سجد وضع يديه غير مفترشٍ ولا قابضهما، واستقبل بأطراف أصابع رجليه القبلة»
“যখন সেজদা করবে উভয় হাতকে বিছিয়ে রাখবে না, আবার মুষ্টিবদ্ধ করেও রাখবে না, পাযের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী করে রাখবে”। হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে কিবলামুখী রাখবে।বুখারি: (৮২৮)  
দুই সিজদার মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করাঃ
তাকবির বলে সেজদা থেকে মাথা উঠাবে । সিজদা থেকে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে ও ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে। এ সময় স্থিরভাবে বসে দো‘আ পড়বে। অতঃপর ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে ও দো‘আ পড়বে। যেমন কমপক্ষে ‘রবিবগফিরলী’ ২ বার বলা।[ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: “তিনি বাম পা বিছিয়ে রাখতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন”। মুসলিম: (৪৯৮) উভয় হাত রানের উপর রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্ন জুবায়ের তার পিতা থেকে মারফূ সনদে বর্ণনা করেন: “নবী (ﷺ) যখন বসতেন তখন তিনি দো‘আ করতেন এবং ডান হাত ডান রানের উপর ও বাম হাত বাম রানের রাখতেন”।মুসলিম: ১১৩-(৫৭৯)  অথবা উভয় হাত হাটুর উপর রাখবে। 
তারপর আল্লাহ আকবর বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে।দ্বিতীয় সিজদা শেষে তাকবির বলে মাথা উঠাবে এবং সামান্য সময় বসবে, যেটাকে জালসায়ে ইস্তেরাহা বলে। এতে কোন জিকির ও দোয়া  নেই।তারপর মাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়াবে।
তাশাহুদঃ
দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে একবারই তাশাহুদ পড়তে হয়।এসময়  বসার নিয়ম হচ্ছে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসবে, ডান পা খাড়া রাখবে এবং আঙ্গুলগুলো কিবলার দিকে রাখবে। বৈঠকের সময় বাম হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাঁটুর প্রান্ত বরাবর ক্বিবলামুখী ও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে এবং ডান হাত ৫৩-এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ রেখে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত শাহাদাত অঙ্গুলি নাড়িয়ে ইশারা করতে থাকবে। মুছল্লীর চোখ ইশারার বাইরে যাবে না।   ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ার পরে দরূদ, দো‘আয়ে মাছূরাহ ও সম্ভব হ’লে বেশী বেশী করে অন্য দো‘আ পড়বে। 
৩ বা ৪ রাকাত সালাত পড়ার নিয়মঃ
স্বলাত যদি তিন রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন মাগরিব অথবা চার রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন জোহর, আসর ও এশা। তাহলে দুই রাকাত পড়ার পর শুধু  তাশাহুদ পড়বে, পা ও হাটুর সম্মুখভাগ এবং রানের উপর ভর দিয়ে তাকবির বলে দাঁড়াবে,আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমরের হাদিসে আছে: “যখন দু’রাকাত থেকে উঠবে উভয় হাত উঠাবে”। বুখারি: (৭৩৯),
শেষ বৈঠকঃ 
৩ বা ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাজে  দ্বিতীয় তাশাহুদে তাওয়াররুক করে বসবে। আবু হুমাইদ সায়েদির হাদিসে আছে: “যখন দ্বিতীয় রাকাতে বসবে, তখন বাম পায়ের উপর বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে। যখন শেষ রাকাতে বসবে, বাম পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া রাখবে ও নিতম্বের উপর বসবে”। বুখারি: (৮২৮) এটাই তাওয়াররুক বসা। এখানে পড়ার নিয়ম ২ রাকাত বিশিষ্ট নামারে শেষ বৈঠকের মত।
সালাম ফিরানোঃ
আমের ইব্ন সাদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখতাম, তিনি ডানে ও বামে আছ্ছালামু অঅলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরাতেন, এমন কি আমি তার গালের শুভ্রতা দেখতে পেতাম”। মুসলিম: (৫৮২)
জামায়াতে নামাজ পড়ার সময় মুক্তাদি ইমামের আনুগত্য করবে।আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন “আনুগত্য করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যখন সে দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় করে, তোমরাও দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় কর, যখন সে রুকু করে তোমরা রুকু কর, যখন সে উঠে তোমরাও উঠ, যখন সে সেজদা করে তোমরাও সেজদা কর, যখন সে বলে: سمع الله لمن حمده তোমরা বল: বুখারি: (৭৮৯), মুসলিম: (৩৯২)
শেষ কথাঃ
কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হ’লে বসে বা শুয়ে ইশারায় স্বলাত আদায় করবে।কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় স্বলাত মাফ নেই।বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮ 
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক, লেখক ও প্রভাষক।

























শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.