ভালো নেই মুরাদনগরের বাস শ্রমিকরা

 

ভালো নেই মুরাদনগরের বাস শ্রমিকরা

 বিভাগ : দেশের খবর  প্রকাশের সময় :২ মে, ২০২১ ৩:১৮ : পূর্বাহ্ণ


মমিন মোল্লা, মুরাদনগর, কুমিল্লা:

দেশে চলছে ১৪দিনের লকডাউন। সংকটময় এই পরিস্থিতিতে দেশে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাদের জীবনে নেমে এসেছে ভয়ঙ্কর কালো দিন।
কুমিল্লা – কোম্পনাীগঞ্জ সুগন্ধার কেরানী আব্দুল খালেকের ছেলে ফখরুল (৩৫) ১০বছর যাবত মোটর লাইনে কাজ করেন। লকডাউনে পড়ে কর্মহীন। প্রতিদিনই কোম্পানীগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে আসেন তার গাড়ির নিকট। সে জনতা গাড়ির হেলপার। গাড়ি চলেনা। মন খারাপ করে গাড়ির প্রিয় হাতলে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। ফখরুল জানান, বাবা-মাসহ সংসারে ৮জন সদস্য। সবাই আমার ওপর নির্ভরশীল। লকডাউনে পড়ে ইনকাম বন্ধ। কাজ নাই টাকাও নাই। পেটে তো আর বুঝে না লকডাউন কি। তাই গ্রামের এনজিওতে ১ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে একটা কিস্তি তুলছি। কিস্তির ত্রিশ হাজার টাকাই ভেঙে ভেঙে খাচ্ছি। পেটে ভাত নাই, পরনের কাপড় নাই। ঈদ নিয়ে কোন স্বপ্ন নেই। শুধু বেঁচে থাকাটাই হচ্ছে কথা।
এরই মধ্যে দেখা হয় গাড়ির শ্রমিক আব্দুল কুদ্দুস (৬০), আল আমিন (২৫) ও ছালা উদ্দিনের (১৮) সাথে। আব্দুল কুদ্দুস সুগন্ধা গাড়ীর কন্ডাকটর, আল আমিন আর ছালা উদ্দিন বিআরটিসি গাড়িতে যাত্রী ডেকে তুলে দেন। বিনিময়ে যেই টাকা পান তাদিয়ে চলে তাদের সংসার। লকডাউনে পড়ে কর্ম হারিয়ে বেকার।
আল আমিন বলেন, ভাই কি করব কার কাছে গিয়ে অভাবের কথা বলব। কেউ কোন সহযোগিতা করে না। সন্তান অসুস্থ ঘরে খাবার নাই। সামনে ঈদ ছেলে মেয়েকে নতুন জামা দিতে পারব বলে মনে হয় না। পরিচিত বড় ভাই-বোন থেকে বলে কিছু টাকা আনছি। এগুলোও শেষ হয়ে গেছে । মাঝে মধ্যে মনে হয়, কেন পৃথিবীতে আসলাম? বাবা হয়ে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে পারি না। কুদ্দুস মিয়া বলেন, এই রমজানে একদিনও মাছ গোস্ত খেতে পারিনি। কয়েকদিন ইফতার করছি শুধু পানি মুড়ি দিয়ে। শ্রমিক সংগঠনও এই বিপদে পাশে নাই। কেউ কোন খবর নেয় না। একটা অটো খুঁজতেছি চালানোর জন্য, তাও পাই না। কি করে বাঁচব জানি না। আমার ছেলে একটা জনতা গাড়ির ড্রাইভার, সেও বেকার। করোনা থেকে বাঁচতে গিয়ে এখন না খেয়ে মরার অবস্থা। কোম্পানীগঞ্জ এলকার শ্রমিকদের মতোই জেলার বিভিন্ন উপজেলার শত শত শ্রমিকের পরিবারে চলছে নীরব কান্না।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.