মুরাদনগরে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য আটক
চেহারা-সুরত ‘নুরানি’। দাড়ি মেহেদিরাঙা। মুখে লেগে থাকে অমলিন হাসি। দেখে মনে হবে ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানেন না। কিন্তু একে এক বেড়িয়ে আসে তার কুকর্ম। কুমিল্লার মুরাদনগরের তরুণলীগ সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা এলাকার ‘বাদশাহ’ বনে গেছেন। নাম তার আবুবকর সালাফি।
![]() |
| মুরাদনগরে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য আটক |
সালাফিকে ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে মুরাদনগর সদরের হোটেল ডায়না থেকে ৫৭ পিস ইয়াবাসহ আটক করেছিল পুলিশ। কিছুদিন কারাগারে থেকে জামিনে এসে আবারো রাজনীতিতে সরব হয়ে উঠলেও বুধবার চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার রহিমানগর সোনালী ব্যাংক থেকে ৩টি ভাউচার জালিয়াতি করে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জালিয়াতি চক্রের প্রধান আবুবকর সালাফিসহ ৫ জন প্রতারক চক্রকে আটক করেছে র্যাব-১১। মুরাদনগর উপজেলা বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে আটক করে র্যাব।
জানা যায়, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার রহিমানগর সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর দুপুরে বিদেশ থেকে পাঠানো গোপন নম্বরের টাকা ৩টি ভাউচার জালিয়াতি করে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওইদিন বিকেলে ক্যাশ মিলানোর সময় বিষয়টি ধরা পড়ে।
একই ভাবে চাঁদপুর সদর মডেল থানাধীন বাবুরহাট বাজার অগ্রণী ব্যাংক শাখা থেকে বিগত ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য দারোরা ইউপি মেম্বার মমিনুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে। পরদিন ১৯ ডিসেম্বর চাদপুর সদর মডেল থানায় মামলা হলে ১৬ দিন পরই তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন জামিনে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে রহিমানগর সোনালী ব্যাংক শাখার কর্মকর্তাগণ তাদের সিসিটিভির ফুটেজ থেকে বাবুরহাট বাজার অগ্রণী ব্যাংক শাখায় ধরা পড়া প্রতারক চক্রটিই তাদের শাখা থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সিসিটিভির ফুটেজসহ বেহাত হওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য র্যাবের শরনাপন্ন হয়।
র্যাব-১১-এর সহকারী পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ মঙ্গলবার রাতে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর চরচারিপাড়া নিজ বাড়ি থেকে প্রতারক চক্রের সদস্য ইদ্রিস মিয়া (৪০) ও তার স্ত্রী সীমা বেগমকে (৩৬) আটক করে। ইদ্রিস মিয়া ওই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। পরে দেবিদ্বার উপজেলা সদরের ভাড়া বাসা থেকে মুরাদনগর উপজেলা তরুণলীগ সভাপতি আবুবকর সালাফিকে (৪২) আটক করে। তিনি পালাসুতা গ্রামের আবু মুছা ওরফে শুয়া মৌলভীর ছেলে।
তাদের স্বীকারোক্তি মতে দারোরা ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলামকে (৪৬)তার স্বশুরবাড়ি কেওটগ্রাম থেকে আটক করে। তিনি দারোরা গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ ওরফে বুলুর ছেলে। পরে ওই চক্রের আরেক সদস্য সিএনজি চালক রুবেল মিয়াকে (২৭) তার শ্বশুরবাড়ি সিদ্ধেশ্বরী থেকে আটক করে। তিনি দারোরা গ্রামের সিএনজি চালক আব্দুল মতিনের ছেলে। তাদেরকে বুধবার ভোর রাতে র্যাব-১১-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে। ধৃত চক্রটির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে ভাউচার জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
র্যাব-১১-এর সহকারী পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ব্যাংক জালিয়াতি চক্রের প্রধান আবুবকর সালাফিসহ ৫ জনকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।29/01/2020
