রবিবার, আগস্ট ১৪, ২০১৬ ১২:০০:০০ AM,
|
হালাল উপায়ে অর্থ উপার্জনের বহু মাধ্যম রয়েছে। কৃষি, ব্যবসা, চাকরি ও আত্ম কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আমরা টাকা পয়সা রোজগার করি। নবী (সা.) নবুয়তের আগে ও পরে ব্যবসা করেছেন। তবে ব্যবসা করতে হবে সততার সঙ্গে।
সূরা বাকারার ২৭৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন। এ আয়াতে দুইটি বিষয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য করা হয়েছে। ব্যবসাকে বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে একটি পণ্য কিনে ক্রেতা তা থেকে সুফল পায়। অন্যদিকে ক্রেতার জন্য ওই পণ্যটি জোগাড় করার ব্যাপারে বিক্রেতা নিজের যে বুদ্ধি, শ্রম ও সময় ব্যয় করেছিল তার মূল্য গ্রহণ করে। ব্যবসায়ে বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে যত বেশি লাভ গ্রহণ করুক না কেন, সে মাত্র একবারই তা গ্রহণ করে। অন্যদিকে কোরআনে সুদকে পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সুদ গ্রহণকারী অর্থের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্রহণ করে। এটি তার জন্য নিশ্চিতভাবে লাভজনক। এতে একটি দলের লাভ ও অন্য দলের লোকসানের হয়। এ বিধান অনুযায়ী একটি দলের নিশ্চিত ও নির্ধারিত লাভ ও অন্য দলের অনিশ্চিত ও অনির্ধারিত লাভ হয়।
সুদের নিয়ম অনুযায়ী অর্থ প্রদানকারী নিজের অর্থের জন্য অনবরত মুনাফা নিতে থাকে। আবার সময়ের ব্যবধানে তা আরও বাড়তে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, সামান্য ঋণের সুদ চক্রবৃদ্ধি আকারে বাড়তে বাড়তে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যা শোধ করতে গিয়ে ঋণ গ্রহীতা সর্বস্বান্ত হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সুদ সম্পর্কে সূরা বাকারার আয়াত নাজিলের পর রাসুল (সা.) তা লোকদের কাছে পাঠ করে শোনালেন। তারপর মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। (বোখারি)।
কাউকে সামান্যতম ঠকানোর মানসিকতা অন্তরে পোষণ করা যাবে না। তাছাড়া মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মজুদ করে রেখে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে মুনাফালাভের প্রবণতা থেকেও বেঁচে থাকতে হবে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মজুদদারি করে সে পাপী। (মুসলিম)। মসজিদে নামাজ আদায়ের পর জীবিকা অর্জনের জন্য জমিনে ছড়িয়ে পড়তে হবে। নবী (সা.) কে সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করে যে উপার্জন করা হয় তা-ই সর্বোত্তম।’ (মুসনাদে আহমদ)। আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা শপথ করে। আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব ও জান্নাত হারাম করেছেন। এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল। যদি তা ক্ষুদ্র জিনিস হয়। তিনি বললেন, যদি তা বাবলা বা দাতন গাছের শাখাও (ডাল) হয়।’ (মুসলিম : ২৬১)। সূরা নিসার ২৯ নং আয়াতেও বলা হয়েছে, হে ঈমানদাররা, তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ে ফেলো না। লেনদেন হতে হবে পারস্পরিক রেজামন্দির ভিত্তিতে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরকাররা লিখেছেন, ‘অন্যায়ভাবে বলতে এখানে এমনসব পদ্ধতির কথা বোঝানো হয়েছে, যা সত্য ও ন্যায়নীতিবিরোধী এবং নৈতিক দিক দিয়েও শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। লেনদেন অর্থ হচ্ছে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থ ও মুনাফার বিনিময় করা, যা ব্যবসায়, শিল্প ও কারিগরি ইত্যাদির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। সেখানে একজন অন্যজনের প্রয়োজন সরবরাহ করার জন্য পরিশ্রম করে এবং তার বিনিময় দান করে।
ধোঁকা ও প্রতারণা এবং জাল-জুয়াচুরি, ছলচাতুরি ও ভেজাল মিশ্রিত করা নিষেধ। হারাম জিনিস গ্রহণ ও এগুলোর ব্যবসা করা নিষেধ। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ব্যবসা করা অবৈধ। এতে সাময়িকভাবে লাভবান হওয়া গেলেও এর শেষ পরিণতি শুভ নয়। কাজেই অন্যায়, জুলুম, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা, মুনাফাখোরি, মজুদদারি ইত্যাদি অবৈধ ও ইসলামবিরোধী কাজ, যা ব্যবসায়ীরা করতে পারবে না।’ (তিরমিজি)।
দ্রব্যের মধ্যে দোষত্রুটি থাকলে তা গোপন করা যাবে না, বরং তা প্রকাশ করে দিতে হবে। সাহাবারা ছোটখাটো ত্রুটিও গোপন করতেন না। এ ব্যাপারে হাসান বিন ছালিহর ক্রীতদাসী বিক্রয়ের ঘটনাটি উল্লেখ করা যায়।
হাসান বিন ছালিহ একটি ক্রীতদাসী বিক্রি করলেন, ক্রেতাকে তিনি বললেন, মেয়েটি একবার থুথুর সঙ্গে রক্ত ফেলেছিল, তা মাত্র একবারের ঘটনা। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার ঈমানি হৃদয় তা উল্লেখ না করে চুপ থাকতে পারল না, যদিও তাতে মূল্য কম হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে সাহাবারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করেন। এমনকি ভারতীয় উপমহাদেশেও বাণিজ্য করার জন্য এসেছেন। তখন তারা ব্যবসা করার পাশাপাশি নির্ভেজাল ইসলাম প্রচার করেছেন। তাই মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী পেশা ব্যবসা। তবে ব্যবসায়ের মধ্যে সততা থাকতে হবে। তার পাশাপাশি থাকবে নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা ও আমানতদারি।
সততার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করলে সাময়িকভাবে লাভ কম হলেও পরকালে তার পুরস্কার পাওয়া যাবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, সত্যবাদী আমানতদার ব্যবসায়ী কেয়ামতের দিন নবী-সিদ্দিক এবং শহীদদের সঙ্গে থাকবে। (তিরমিজি)। ব্যবসা করতে গিয়ে কাউকে ঠকানো যাবে না। হাদিসে বর্ণিত আছে, একদা নবী করিম (সা.) কোনো খাদ্যস্তূপের পাস দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি খাদ্যস্তূপে হাত দিয়ে দেখলেন, ভেতরে ভেজা। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতা জানালেন, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। তিনি তখন প্রশ্ন করলেন, তাহলে ভেজা অংশটা শস্যের ওপর রাখলে না কেন? যাতে ক্রেতারা তা দেখে ক্রয় করতে পারে। নিশ্চয় যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়।
সূরা বাকারার ২৭৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন। এ আয়াতে দুইটি বিষয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য করা হয়েছে। ব্যবসাকে বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে একটি পণ্য কিনে ক্রেতা তা থেকে সুফল পায়। অন্যদিকে ক্রেতার জন্য ওই পণ্যটি জোগাড় করার ব্যাপারে বিক্রেতা নিজের যে বুদ্ধি, শ্রম ও সময় ব্যয় করেছিল তার মূল্য গ্রহণ করে। ব্যবসায়ে বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে যত বেশি লাভ গ্রহণ করুক না কেন, সে মাত্র একবারই তা গ্রহণ করে। অন্যদিকে কোরআনে সুদকে পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সুদ গ্রহণকারী অর্থের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্রহণ করে। এটি তার জন্য নিশ্চিতভাবে লাভজনক। এতে একটি দলের লাভ ও অন্য দলের লোকসানের হয়। এ বিধান অনুযায়ী একটি দলের নিশ্চিত ও নির্ধারিত লাভ ও অন্য দলের অনিশ্চিত ও অনির্ধারিত লাভ হয়।
সুদের নিয়ম অনুযায়ী অর্থ প্রদানকারী নিজের অর্থের জন্য অনবরত মুনাফা নিতে থাকে। আবার সময়ের ব্যবধানে তা আরও বাড়তে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, সামান্য ঋণের সুদ চক্রবৃদ্ধি আকারে বাড়তে বাড়তে এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যা শোধ করতে গিয়ে ঋণ গ্রহীতা সর্বস্বান্ত হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সুদ সম্পর্কে সূরা বাকারার আয়াত নাজিলের পর রাসুল (সা.) তা লোকদের কাছে পাঠ করে শোনালেন। তারপর মদের ব্যবসা নিষিদ্ধ করে দিলেন। (বোখারি)।
কাউকে সামান্যতম ঠকানোর মানসিকতা অন্তরে পোষণ করা যাবে না। তাছাড়া মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মজুদ করে রেখে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে মুনাফালাভের প্রবণতা থেকেও বেঁচে থাকতে হবে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মজুদদারি করে সে পাপী। (মুসলিম)। মসজিদে নামাজ আদায়ের পর জীবিকা অর্জনের জন্য জমিনে ছড়িয়ে পড়তে হবে। নবী (সা.) কে সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘নিজ হাতে কাজ করা এবং হালাল পথে ব্যবসা করে যে উপার্জন করা হয় তা-ই সর্বোত্তম।’ (মুসনাদে আহমদ)। আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা শপথ করে। আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব ও জান্নাত হারাম করেছেন। এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল। যদি তা ক্ষুদ্র জিনিস হয়। তিনি বললেন, যদি তা বাবলা বা দাতন গাছের শাখাও (ডাল) হয়।’ (মুসলিম : ২৬১)। সূরা নিসার ২৯ নং আয়াতেও বলা হয়েছে, হে ঈমানদাররা, তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ে ফেলো না। লেনদেন হতে হবে পারস্পরিক রেজামন্দির ভিত্তিতে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরকাররা লিখেছেন, ‘অন্যায়ভাবে বলতে এখানে এমনসব পদ্ধতির কথা বোঝানো হয়েছে, যা সত্য ও ন্যায়নীতিবিরোধী এবং নৈতিক দিক দিয়েও শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। লেনদেন অর্থ হচ্ছে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থ ও মুনাফার বিনিময় করা, যা ব্যবসায়, শিল্প ও কারিগরি ইত্যাদির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। সেখানে একজন অন্যজনের প্রয়োজন সরবরাহ করার জন্য পরিশ্রম করে এবং তার বিনিময় দান করে।
ধোঁকা ও প্রতারণা এবং জাল-জুয়াচুরি, ছলচাতুরি ও ভেজাল মিশ্রিত করা নিষেধ। হারাম জিনিস গ্রহণ ও এগুলোর ব্যবসা করা নিষেধ। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ব্যবসা করা অবৈধ। এতে সাময়িকভাবে লাভবান হওয়া গেলেও এর শেষ পরিণতি শুভ নয়। কাজেই অন্যায়, জুলুম, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা, মুনাফাখোরি, মজুদদারি ইত্যাদি অবৈধ ও ইসলামবিরোধী কাজ, যা ব্যবসায়ীরা করতে পারবে না।’ (তিরমিজি)।
দ্রব্যের মধ্যে দোষত্রুটি থাকলে তা গোপন করা যাবে না, বরং তা প্রকাশ করে দিতে হবে। সাহাবারা ছোটখাটো ত্রুটিও গোপন করতেন না। এ ব্যাপারে হাসান বিন ছালিহর ক্রীতদাসী বিক্রয়ের ঘটনাটি উল্লেখ করা যায়।
হাসান বিন ছালিহ একটি ক্রীতদাসী বিক্রি করলেন, ক্রেতাকে তিনি বললেন, মেয়েটি একবার থুথুর সঙ্গে রক্ত ফেলেছিল, তা মাত্র একবারের ঘটনা। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার ঈমানি হৃদয় তা উল্লেখ না করে চুপ থাকতে পারল না, যদিও তাতে মূল্য কম হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে সাহাবারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করেন। এমনকি ভারতীয় উপমহাদেশেও বাণিজ্য করার জন্য এসেছেন। তখন তারা ব্যবসা করার পাশাপাশি নির্ভেজাল ইসলাম প্রচার করেছেন। তাই মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী পেশা ব্যবসা। তবে ব্যবসায়ের মধ্যে সততা থাকতে হবে। তার পাশাপাশি থাকবে নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা ও আমানতদারি।
সততার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করলে সাময়িকভাবে লাভ কম হলেও পরকালে তার পুরস্কার পাওয়া যাবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, সত্যবাদী আমানতদার ব্যবসায়ী কেয়ামতের দিন নবী-সিদ্দিক এবং শহীদদের সঙ্গে থাকবে। (তিরমিজি)। ব্যবসা করতে গিয়ে কাউকে ঠকানো যাবে না। হাদিসে বর্ণিত আছে, একদা নবী করিম (সা.) কোনো খাদ্যস্তূপের পাস দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি খাদ্যস্তূপে হাত দিয়ে দেখলেন, ভেতরে ভেজা। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতা জানালেন, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। তিনি তখন প্রশ্ন করলেন, তাহলে ভেজা অংশটা শস্যের ওপর রাখলে না কেন? যাতে ক্রেতারা তা দেখে ক্রয় করতে পারে। নিশ্চয় যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়।