বান্দার হক আদায়ে
আল্লাহর সন্তুষ্টি
দৃশ্যের-অদৃশ্যের সবকিছু আল্লাহর সৃষ্টি। এসবের সৃষ্টির মধ্যে মানুষই
সর্বশ্রেষ্ঠ। হাক্কুল ইবাদের অংশহিসেবে মানুষের উচিত আল্লাহর গোটা সৃষ্টি জগৎ
সম্পর্কে জানা এবং সেবামূলক মনোভাব পোষণ করা। একজন মুসলমানকে দু’ধরনের হক আদায়
করতে হয়। একটি হচ্ছে আল্লাহর হক অন্যটি বান্দার হক। বান্দার হক হিসেবে ব্যক্তির
নিজের ওপর নিজের হক রয়েছে। সে কারণে কোনো ব্যক্তি নিজে তার অকল্যাণ কামনা করতে
পারে না। যে লোক নিজের হক আদায় করে না সে অন্য কারো হকের প্রতি সচেতন নয়। সূরা আল
কাহাফে আল্লাহ বলেন, সে নিজের প্রতিই জুলুমকারী। কেউ কেউ বলতে পারেন ব্যক্তি নিজের
ওপর জুলুম করে কিভাবে? ইমাম কুরতুবি এ ব্যাপারে বলেন, যে ব্যক্তি কুফরি করার
মাধ্যমে নিজেকে জাহান্নামে যাওয়ার যোগ্য বানায় সে নিজেই নিজের ওপর জুলুম করে।
নিজের হক আদায় না করার কারণেই সে জাহান্নামে যাবে। নিজের প্রতি নিজে কর্তব্য পালন-
এক কথায় নিজের ওপর নিজের হক আদায় করতে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে সর্বপ্রকার জুলুম থেকে
বিরত রাখতে হবে।
অন্যায় কাজের
প্রতিরোধ করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। সূরা মায়েদাতে আল্লাহ বলেন, তারা যেসব
অসৎকর্ম করত তা থেকে একে অন্যকে নিষেধ করত না। তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট।’ এ
আয়াতের এক ব্যাখ্যায় তাফসিরকারকরা লিখেছেন- প্রত্যেক জাতির বিকৃতি শুরু হয় কয়েকজন
বিপথগামী ব্যক্তি থেকে। জাতির সামগ্রিক বিবেক জাগ্রত থাকলে সাধারণ জনমত ওই
বিপথগামী লোকদের দমিয়ে রাখে এবং জাতি সামগ্রিকভাবে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়।
ক্ষমা মহৎ গুণ। তাই মানুষকে ক্ষমাসুলভ মনোভাব দেখাতে হবে। যখন রাসূল (সা.)কে দুটি
কাজের মধ্যে একটি গ্রহণ করার এখতিয়ার দেয়া হতো তখন তিনি সহজটি গ্রহণ করতেন। তিনি
নিজের জন্য কখনও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। আল্লাহ বলেন, অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে
যারা মানুষের ওপর অত্যাচার চালায় এবং দুনিয়াতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায় তাদের
জন্য রয়েছে পীড়াদায়ক শাস্তি। অবশ্য যে সবর করেও কষ্ট করে, নিশ্চয় এটা অনন্য
সাহসিকতার কাজ (সূরা শুরা ৪১-৪৩)। আত্মহত্যা করা মহাপাপ। যারা স্বহস্তে নিজের জীবন
খতম করে তাদের ওপর আল্লাহর ক্রোধ অবিসম্ভাবী। আত্মহত্যাকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে
না। সূরা নিসায় (৩০) আল্লাহ বলেন, আর তোমরা নিজেদের হত্যা কর না। নিশ্চয় আল্লাহ
তোমাদের ওপর দয়ালু। যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি ও জুলুমের মাধ্যমে এ কাজ করবে তাকে আমি
আগুনে পোড়াব। এ কাজ আল্লাহর পক্ষে খুবই সহজ। সূরা আল ইশরাত (আয়াত ৩৩) আল্লাহ বলেন,
আর কোনো ব্যক্তিকে যথাযথ কারণ ব্যতীত হত্যা কর না। যাকে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। আর
যে কেউ অন্যায়ভাবে নিহত হয় ইতিমধ্যে আমরা তার অভিভাবককে অধিকার দিয়েছি, কাজেই
হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে। সে নিশ্চয় সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। মুমিন
ব্যক্তিদের হত্যা করার ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মজিদে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যে
ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাপূর্বক হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম। যাতে সে
স্থায়ীভাবে থাকবে। তার ওপর আল্লাহর ক্রোধ ও অভিশম্পাত। আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি
নির্দিষ্ট করে রেখেছেন (নিসা ৯৩)। ২৩)।
এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে পাপের কাজে লিপ্ত দেখে প্রথমে তাকে বলত : হে ব্যক্তি! আল্লাহ ভয় কর, তুমি যা করছ তা বন্ধ কর, পরিহার কর। কেননা এ কাজ তোমার জন্য মোটেও হালাল নয়। কিন্তু পরের দিন যখন সে সেই ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করত, তখনও সেই গোনাহের কাজে তাকে লিপ্ত দেখে তা করতে নিষেধ করত না। বরং তার সঙ্গেই আসন গ্রহণ করে পানাহারে শরিক হয়ে যেত। এসব ব্যক্তির ওপর যারা পাপ করত এবং যারা বাধা দিত না উভয়ের ওপর পরে আল্লাহর আজাব বর্ষিত হয়। কোরআনের অন্য আয়াতে নির্লজ্জতা, ঘৃণ্য ও সীমালংঘনমূলক কাজ করতে নিষেধ করেছেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহর হকের পাশাপাশি বান্দার হকেরও গুরুত্ব দিতে হবে। প্রত্যেক মুসলমানের চারটি হক রয়েছে। অসুস্থ হলে তার সেবা করা, বিপদে পড়লে সাহায্য করা, কারো মৃত্যু হলে দাফন-কাফনে শরিক হওয়া এবং সাহায্য চাইলে সাহায্য করা।
সমাজের সবার সঙ্গে বিনয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে। একজন মানুষ অন্য মানুষের কাছ থেকে সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার রাখে। সে মুসলিম হোক আর অমুসলিম হোক। কারো প্রতি খারাপ আচরণ করা যাবে না। বিনয়, নম্রতা ও উত্তম চরিত্রের পরিচয় বহন করে। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ও তার সাহাবাগণ। সূরা আল ফোরকানে (আয়াত-৬৩) আল্লাহ বলেন, তারাই তো রহমান আল্লাহর প্রকৃত বান্দা যারা জমিনে নম্রতার সঙ্গে চলাফেরা করে। আর তখন মূর্খ লোকেরা তাদের সঙ্গে আল্লাহ বিষয়ে তর্ক করে তখন তারা বলে দেয় তোমাদের সালাম। শরিয়তসম্মত বিধির বাইরে কারো মান-সম্মান নষ্ট করা বড় গুনাহ। মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, কোনো বান্দা যদি অপর কারোর দোষ-ত্রুটি দুনিয়াতে পোপন রাখে আল্লাহ তায়ালা তার দোষ-ত্রুটি কিয়ামত দিবসে গোপন রাখবেন।
লেখক : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক
maminmollah@yahoo.com
এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে পাপের কাজে লিপ্ত দেখে প্রথমে তাকে বলত : হে ব্যক্তি! আল্লাহ ভয় কর, তুমি যা করছ তা বন্ধ কর, পরিহার কর। কেননা এ কাজ তোমার জন্য মোটেও হালাল নয়। কিন্তু পরের দিন যখন সে সেই ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করত, তখনও সেই গোনাহের কাজে তাকে লিপ্ত দেখে তা করতে নিষেধ করত না। বরং তার সঙ্গেই আসন গ্রহণ করে পানাহারে শরিক হয়ে যেত। এসব ব্যক্তির ওপর যারা পাপ করত এবং যারা বাধা দিত না উভয়ের ওপর পরে আল্লাহর আজাব বর্ষিত হয়। কোরআনের অন্য আয়াতে নির্লজ্জতা, ঘৃণ্য ও সীমালংঘনমূলক কাজ করতে নিষেধ করেছেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহর হকের পাশাপাশি বান্দার হকেরও গুরুত্ব দিতে হবে। প্রত্যেক মুসলমানের চারটি হক রয়েছে। অসুস্থ হলে তার সেবা করা, বিপদে পড়লে সাহায্য করা, কারো মৃত্যু হলে দাফন-কাফনে শরিক হওয়া এবং সাহায্য চাইলে সাহায্য করা।
সমাজের সবার সঙ্গে বিনয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে। একজন মানুষ অন্য মানুষের কাছ থেকে সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার রাখে। সে মুসলিম হোক আর অমুসলিম হোক। কারো প্রতি খারাপ আচরণ করা যাবে না। বিনয়, নম্রতা ও উত্তম চরিত্রের পরিচয় বহন করে। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমাদের প্রিয় নবী (সা.) ও তার সাহাবাগণ। সূরা আল ফোরকানে (আয়াত-৬৩) আল্লাহ বলেন, তারাই তো রহমান আল্লাহর প্রকৃত বান্দা যারা জমিনে নম্রতার সঙ্গে চলাফেরা করে। আর তখন মূর্খ লোকেরা তাদের সঙ্গে আল্লাহ বিষয়ে তর্ক করে তখন তারা বলে দেয় তোমাদের সালাম। শরিয়তসম্মত বিধির বাইরে কারো মান-সম্মান নষ্ট করা বড় গুনাহ। মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, কোনো বান্দা যদি অপর কারোর দোষ-ত্রুটি দুনিয়াতে পোপন রাখে আল্লাহ তায়ালা তার দোষ-ত্রুটি কিয়ামত দিবসে গোপন রাখবেন।
লেখক : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক
maminmollah@yahoo.com