”একদিন হঠাৎ করে পাক বাহিনীর আক্রমণ শুরু হয়ে যায়। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের যে ক্যাম্পে ছিলেন সে ক্যাম্পের সকল যোদ্ধা তখন অপারেশনের জন্য
বের হয়ে গেছেন। তিনি আল্লাহকে ডাকতে শুরু করলেন। হঠাৎ খেয়াল হলো ঘরে ৪টি চাইনিজ রাইফেল ও একধামা গুলি আছে । এগুলো বাঁচাতে হবে। তার কোলে তখন ২
মাসের শিশু স্বাধীন, তিনি
অস্ত্রগুলো নিয়ে পালাতে গিয়ে তার কোলের শিশুটি একটি গর্তে পড়ে যায়। ভাগ্য ভাল কাজের মেয়েটিও সাথে ছিল। সে তৎক্ষনাৎ শিশুটিকে পানি থেকে
তুলে ফেলে। কিছুক্ষণ পরেই ক্যাম্পটি হানাদারদের দখলে চলে যায়” মহিলা মুক্তিযোদ্ধা সাফিনা লোহানি বলেন-একজন বীরাঙ্গনা প্রিয়ভাষিনী
বল্লেন -সেদিনের কথা,
চোখের সামনে নারকীয় দৃশ্য। নারীদের আর্ত
চিৎকার। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া বেঁচে ফিরে আসব এটা কখনও ভাবিনি। তবুও বেঁচে
আছি। আমি আজ স্বাধীনতা পদক পেয়েছি। শ্রদ্ধার সঙ্গে এ
পদক মাথা পেতে নিয়েছি। দীর্ঘদিন এক বুক
কান্নার নদী বয়ে বেড়াচ্ছি। যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি হলে কিছুটা হলেও শান্তি পাব। এক জরিপে দেখা যায়, পাকিস্তানি
সৈন্য সংখ্যা ছিল রক্ষাধিক।
তাদের সাথে বেসামরিক বিহারি ছিল প্রায়
৪০ হাজার, দেশীয় রাজাকার ছিল অর্ধলক্ষাধিক
। তাদের অধিকাংশই ছিল নারী লোভী। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় কয়েকটি ক্যান্টনমেন্ট ছাড়াও সহ¯্রাধিক
ক্যাম্প ও ছাউনিতে প্রকাশ্যে গোপনে প্রতিদিন
গড়ে ১৪০০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়। ভিক্ষুক সেজে পাক বাহিনির অবস্থান মুক্তিযোদ্ধাদের জানিয়ে দিতেন বাগেরহাটের মেয়ে
মেহেরুন্নেসা মীরা।
তার মূল দায়িত্ব ছিল ক্যাম্প পাহাড়া
দেয়া। একদিন বিঞুপুর হাই স্কুল এর উদ্দেশ্যে
মুক্তিযোদ্ধারা রওয়ানা হন। মিরা আগেই গিয়ে খবর নেন । জানতে পারেন রাজাকাররা প্রস্তুত। তখন তিনি খাল পারাপারের সেতুটি সরিয়ে নেন।
ফলে মুক্তিযোদ্ধারা রক্ষা পান।
✌বাংলাদেশের
স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল নারী পুরুষের মিলিত প্রচেষ্টা। এ যুদ্ধে অনেক নারী সরাসরি যুদ্ধে অবতীর্ণ হন , কেউ
কেউ হাসপাতালগুলোতে সেবিকার
দায়িত্ব পালন করেছেন, কেউ
কেউ গোলা বারুদ সংগ্রহ করেছেন। আবার কেউ কেউ যুদ্ধের
পক্ষে জনমত গড়ে তুলে যুদ্ধকে বেগবান করেছেন। তারা পুরুষের পাশে থেকে সবসময় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।? মুক্তিযুদ্ধের
সময় ভারতে প্রচারকাজেও
মেয়েরা বিশেষ ভুমিকা পালন করেছিলেন।
রাফিয়া আক্তার ডলি সহ অনেকেই সেদিন কোলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসমুহে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে উদ্ভুদ্ধ করা ও শিবিরগুলোতে খাবার ও কাপড় যোগাড়ে সর্বাত্মক
সহযোগিতা করেন।
✌কিছু
কিছু মহিলা পুরুষদের মতই ভারতের প্রশিক্ষণ শিবিরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাটে ছিল এধরণের একটি প্রশিক্ষণ
কেন্দ্র। এ মহকুমার টাকিতে ৯নং সেক্টরের মূল
হেডকোয়ার্টার ছিল। মেজর জলিলের নেতৃত্বে এখানে
একটি ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে শতাধিক নারীকে গুপ্তচরবৃত্তির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া এখানে প্রাথমিক চিকিৎসার ট্রেনিং দেয়া হয়। মোসাম্মৎ সালেহা, সাজেদা
ও ফরিদাসহ বহু নারী এখানে ট্রেনিং নিয়ে মক্তিযোদ্ধাদের
সেবায় নিয়োজিত থাকেন। দেশের ভেতরও মহিলাদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা ছিল। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে
মহিলাদের ট্রেনিং
এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মরিচা হাউজের
সামনে দুই শতাধিক মহিলা ঢামি
রাইফেলস দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
একাজে নেতৃত্তদানকারী মহিলাদের মধ্যে কল্যাণী
ঘোষ, উমা, স্বপ্না রায়, বুলবুল
মহলান বীনা, অমিতা বসু,
ফ্লোরা আহমেদ
ও ফেরদৌসি মজুমদারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
মমতাজের খবর কেউ নেননি।
মমতাজের খবর কেউ নেননি।
✌এমনইভাবে
একাত্তরের দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের
খঞ্জনী বেগম, কুষ্টিয়ার দুলজাহানন্নেছা ও বরগুনার আমিরুন্নেছা।একাত্তরের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কতজন নারী
অত্মহত্যা করেছেন এর কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। কেউ
ক্যাম্প থেকে বের হয়ে আত্মহত্যা
করেছেন আবার কেউবা আত্ময়-স্বজন কর্তৃক
ধিকৃত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এছড়া বহু
নারী প্রাণ বাঁচাতে পতিতার খাতায় নাম লিখিয়েছেন।
”নারী কণ্ঠ ফাউন্ডেশন” এর সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে -যুদ্ধকালীন নয় মাসে বাংলাদেশে সম্ভ্রম হারানো নারীর সংখ্যা ২ লাখ নয় ৪ লাখ। ৮ বছর বয়সের কিশোরী থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা ও সেদিন পাক সেনাদেও লালসার শিকার হয়েছেন। গরীব-ধনী কেউই সেদিন রক্ষা পায় নি। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আর জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বেশিরভাগ আলোচনা হয়। কিন্তু নারী যোদ্ধাদের (যারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন) নিয়ে তেমন কোন আলোচনা হয় না বল্লেই চলে। অর্থাাৎ সেদিনও তারা অবহেলিত । এর চেয়ে দুঃকজনক আর কী
”নারী কণ্ঠ ফাউন্ডেশন” এর সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে -যুদ্ধকালীন নয় মাসে বাংলাদেশে সম্ভ্রম হারানো নারীর সংখ্যা ২ লাখ নয় ৪ লাখ। ৮ বছর বয়সের কিশোরী থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা ও সেদিন পাক সেনাদেও লালসার শিকার হয়েছেন। গরীব-ধনী কেউই সেদিন রক্ষা পায় নি। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আর জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বেশিরভাগ আলোচনা হয়। কিন্তু নারী যোদ্ধাদের (যারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন) নিয়ে তেমন কোন আলোচনা হয় না বল্লেই চলে। অর্থাাৎ সেদিনও তারা অবহেলিত । এর চেয়ে দুঃকজনক আর কী
মমিনুল ইসলাম মোল্লা
