দেবিদ্বারের সব্জি ভান্ডার এলাহাবাদ


দেবিদ্বারের সব্জি ভান্ডার এলাহাবাদ

মমিনুল ইসলাম মোল­া
দেবিদ্ধারের এলাহাবাদে সব্জি চাষে নিরব বিপ্লব ঘটেছে। এত দিন ধান,আলু, ভুট্টা চাষে খ্যাতি অর্জন করলেও এখন এগুলোর পাশাপাশি চাষীরা শাক-সব্জী চাষে মনযোগী হচ্ছে। এখানকার শাক-সব্জি পাইকারদের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে দেবিদ্ধার,মুরাদনগর,ব্রাহ্মনপাড়া,বুড়িচংসহ জেলার অন্যান্য উপজেলায়। এছাড়া আলু,ফুলকপি, বাঁধাকপি,ট্রাকে করে যাচ্ছে সিলেট, চট্টগ্রাম,ও ঢাকায়। এসব দ্রব্যের পাইকারী বাজার বসে এলাহাবাদে। ভোরের আলো ফুটে উঠতেই দেখা যায় কারো কাঁধে ভার,কেউবা সাইকেলে,রিক্সা ভ্যানে,কিংবা অটোরিক্সায় করে নানা প্রকারের শাক সব্জি এনে এলাহাবাদ পাইকারী বাজারে জড়ো করছে।
ফজরের আজানের সময়ই বেপারী আর পাইকারদের হাঁক-ডাক শুরু হয়ে যায়। তাদের দর কষাকষির আওয়াজে মুখরিত হয়ে হয়ে যায় চারদিক। দেবিদ্ধার থেকে পূর্ব দিকে কুমিল­া –সিলেট সড়কে ৪ কিলোমিটার গিয়ে চরবাকর স্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার গেলেই এই বাজারে সহজে পৌঁছা যায়। চরবাকর চান্দিনা মূল সড়কের পাশেই মসজিদ রোডের দুপাশে পশরা সাজিয়ে চাষীরা বসে থাকে ।
কৃষক আব্দুল করিম জানান, ১০/১২ বছর দরে এখানে পাইকারী বাজার বসছে। শনি ও বুধবাওের কংশনগরের বাজার বসায় এ দুদিন বেচা-কেনা কম হয়। অন্যান্য দিন ১৫০/২০০জন কৃষক পণ্য বিক্রি করতে আসেন। যতই দিন যাচ্ছে এলাহাবাদ পাইকারী বাজার ততই প্রসারিত হচ্ছে। কৃষক ও পাইকারের সংখ্যা বাড়ছে। এলাহাবাদ বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শতাধিক শাক-সব্জি চাষী নানা প্রকার শাক-সব্জি নিয়ে বাজারে এসেছে। সব্জির জন্য বিখ্যাত এলাহাবাদ ,মোহনপুর ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের লোকেরা এখানে তাদের উৎপাদিত শাক-সব্জি নিয়ে আসেন। পাইকাররাও রিক্সা,ভ্যান,অটোরিক্স্া ও সিএনজি নিয়ে এসে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। পছন্দমতো তরকারি কিনে এগুলোতে লোড করেন। যানবাহনে উঠিয়ে দেয়ার জন্য কয়েকজন শ্রমিক রয়েছে।  তারা সুন্দর করে শাক-সব্জির পশরা সাজিয়ে দেন। 
মানিকচন্দ্র দে জানান-ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এখানে পাইকারি কেচা-কেনা হয়। তারপর এগুলো চলে যায় দূর-দূরান্তের বাজারে। পাইকারি বাজারে কথা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পাইকারদের সাথে।কোম্পানীগঞ্জের আজম,দেবিদ্বারের মিজান,মুরাদনগরের জসিম,দেবিদ্ধারের বাচ্চু,খোরশেদ,বেগমাবাদের করম আলি,মুরাদনগরের সজল মিয়া ও সাইচাপাড়ার মোবারক হোসেন জানান-এখানে দাললদের কোন উৎপাৎ নেই। ফলে নিজেদের পছন্দমতো শাক-সব্জি কিনে  বাজারে নিয়ে বিক্রি করা যায়।
এখানে এলাহাবাদ বাদেও হাড়সার,শুভপুর, গাদিসাইর, মোহনপুর,মোাহাম্মদপুর, ললিতাসার,কাচিসাইর, শ্রীপুর,ধামতী,পোনরা,গেীড়সার,ও বারুর গ্রামের চাষিীরা শাক-সব্জি বিক্রি করে।
শুধুমাত্র শীতকালই নয় এখানে সারা বছর শাক সব্জি পাওয়া যায়। মৌসুমি সব্জির মধ্যে বিপুল পরিমাণ করল­া,কইড্,াঝিঙ্গা,ধুন্দুল, লাউ, মিষ্টিকুমড়া,চাল কুমড়া, ঢেড়শ, কাঁচকলা,বরবটি, জালি,শশা, আলু,তালের ডাব,কাচামরিচ,ধনিয়াপাতাসহ সবধরণের শাকসব্জি এখানে পাওয়া যায়।
সব্জি বেচাকেনার ফাঁকে কথা হয় এলাহাবাদের চাষী মনির,নুরু,শহীদ,সুলতান কবির কামাল, রেনু, জামাল, ও মালেকের সাথে।তারা জানান,এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় লাউ, করল­া, ফুল কপি,চাষে তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। 
মোহাম্মদপুরের সুলতান,রহমত আলী,সাদেক আলী, মনু মিয়া ও কামাল আহমেদ জানান,এলাহাবাদে পাইকারি বাজার হওয়ায় শাক-সব্জি বিক্রি করতে তাদের কোন চিন্তা করতে হয়না। অনেক সময় জমিতে থাকতেই বিক্রি  করে দেয়া যায়।
কৃষকরা জানান,এলাহাবাদ ব্লকে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন তাদেরকে সঠিকভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বশির আহমেদ ও এলাহাবাদের কৃষকদের ব্যাপারে আশাবাদী। কৃষকদের মতে এলাহাবাদের মতো আরো কয়েকটি সব্জি ভান্ডার থাকলে শাক-সব্জি নিয়ে ক্রেতাদের চিন্তা করতে হতো না ।
সধসরহসড়ষষধয@ুধযড়ড়.পড়স


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.