কুমিল্লায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দাবী
মমিনুল ইসলাম মোল্লাপ্রধানমন্ত্রীর নিকট আনেকগুলো দাবী উথ্বাপন করা হবে, তার মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা গণমানুষের দাবী। জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎবিভাগ সূত্র জানায় , ১১ টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। কুমিল্লায় প্রাপ্ত গ্যাসের মাধ্যমে অনায়াসে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হতে পারে।
কুমিল্লার বিখ্যাত গ্যাস ফিল্ড হচ্ছে শ্রীকাইল গ্যাস ফিল্ড। ২০০৫ সালে বাপেক্স শ্রীকাইলে একটি ক‚প খনন করে। খননের পর সেখান থেকে গ্যাস উঠতে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝেই গ্যাসের সাথে পানি আসতে থাকে ফলে এ ক‚পটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১২ সালের মে মাসে উপজেলার মোখলেসপুরে শ্রীকাইল ক‚প-২ খনননের কাজ শুরু হয়। ১০ জুলাই প্রাথমিক কাজ শেষ হয়। ১৩ জুলাই প্রথমবারের মতো আগুন দেয়া হয়। এসময় দেখা যায় প্রতিদিন ২য় স্তর থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উঠছে। ভুগর্ভের ৩১ শ মিটার গভীরে খননের মাধ্যমে দেখা যায় এখান থেকে প্রতিদিন ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব।এ স্তর থেকে প্রতিদিন ১ কোটি ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোরন করা যাবে। শ্রীকাইলে গ্যাসানুসন্ধান করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড। পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান ড.হোসেন মনসুর আশা প্রকাশ করেন এ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে এ ক্ষেত্রের গ্যাস বাণিজ্যেকবাবে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে । এ ক্ষেত্রের গ্যাস শিল্প ,গ্যাস, সার ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহার করা যাবে।
কুমিল্লার গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বাখরাবাদ ক্ষেত্রটি সবচেয়ে পুরুনো। ১৯৬৯ সালে তদান্তিন পাকিস্তান সরকার শেলওয়ে কোম্পানিকে এব্যাপারে দায়িত্ব দিলে গ্যাস ক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয়। এটি সরু ও লম্বাটে। এটি লম্বায় ৬৯ কিলোমিটার ও প্রস্থে ১০ কিলোমিটার। এখানে মোট মজুদ গ্যাসের পরিমাণ ১.০৪৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট,(টিসিএফ)। ১৯৮৪ সালে বাখরাবাদ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এখানকার গ্যাস বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেড নামে সারাদেশে সরবহা করা হচ্ছে। কুমিল্লার আরেকটি বিখ্যাত গ্যাসক্ষেত্র মুরাদনগরের বাঙ্গরা গ্যাসক্ষেত্র। আর্ন্তজাতিক ঠিকাদার অপারেটর কোম্পানি “তাল্লো বাংলাদেশ লিমিটেড ”বাঙ্গরা গ্যাস ফিল্ডে কাজ করছে। এ গ্যাস ফিল্ডের ৯নং বøকে গ্যাস অনুসধানের জন্য ২০০১ সালে পেট্রোবাংলার সাথে চুক্তি হয়। ২০০৪ সালে ১ নং ক‚পটি খননকালে বাঙ্গরা ক্ষেত্রটি আবিষ্কার হয় ২০০৬ সালের মে মাসে উৎপাদন কার্যক্রম চালু করা হয়। বর্তমানে ১০০-১২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। কুমিল্লার দেবিদ্ধারে একটি গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে এটি গোপালনগর গ্যাস ক্ষেত্র নামে পরিচিত। গোপালনগর গ্যাস ফিল্ডের পাবলিক রিলেসন্সের ম্যানেজার মেজর (অবঃ) বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর উল্লাহ খান এর দেয়া তথ্যে জানা যায়-খনিজ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং আহরণ বিশ্ববিখ্যাত যুক্তরাজ্যভিত্তিক অয়েল পিএলসি এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তাল্লো বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯৯৭ সালে থেকে বাংলাদেশের ৯ নং নম্বর বøক থেকে (কুমিল্লা) অঞ্চলের তেল, গ্যাস, অনুস্ধান ও উত্তোলন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গোপালনগর গ্যাসফিল্ড থেকে উত্তোলিত হয়ে প্রায় ৪০-৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বাঙ্গরা গ্যাস ফিল্ডের নামে কিছুদিন উত্তোলিত হয়ে । তবে বর্তমানে এর উত্তোলন ও সরবরাহ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
কুমিল্লায় প্রাপ্ত গ্যাসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্দোগ নেয়া হলে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের সরবরাহ আগের তুলনায় বাড়ানো যেত। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে খরচ কম। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখাতকে প্রাধান্য দেয়া উচিত। আর গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র বাড়াতে হলে গ্যাসের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে হবে। সরকার ক্ষমতায় আসার পর পর গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য বাপেক্সের মাধ্যমে নতুন ক‚প খনন ও পুরনো কুপ সংসকারের উদ্দোগ নিলে এতদিনে আরো ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট বাড়তি গ্যাস পাওয়া যেত। এর মাধ্যমে ১০টি ক‚প থেকে উত্তোলিত গ্যাসের মাধ্যমে ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। কুমিল্লাবাসীর আন্তরিক বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী এব্যাপাওে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ এপ্রিল (শনিবার) মুরাদনগরে আসছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মুরাদনগরসহ কুমিলায় এটাই তাঁর প্রথম সফর। ওইদিন সকাল ১০টায় মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল (মুকলিশপুর) গ্যাস ক্ষেত্রের কূপ খনন এবং ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার আন্তসংযোগ পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সঞ্চালন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৬৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে পেট্রোবাংলা ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। পরে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় আওয়ামীলীগ আয়োজিত একটি জনসভায় বক্তৃতা করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এসময়
লেখক: মমিনুল ইসলাম মোল্লা,প্রভাষক, ক্যাম্পেনার সিডিএলজি এবং সহকারী সম্পাদক , (দৃষ্টান্ত ডট কম), কুমিল্লা, News Archives 20/04/2013