স্মৃতিতেঃ দেবিদ্ধারের মিস্ত্রী গ্রাম বারুর



একটি দেশকে সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরণের পেশার মূল্যায়ণ প্রয়োজন। ব্যাপারে সেন বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক পেশাগত শৃঙ্খলার জন্য বর্ণ প্রথা চালু করেন। জনসাধারণের জীবন যাত্রাকে  সুন্দর করার জন্য তিনি কর্মজীবি লোকদের বিভক্ত করে কামার-কুমার, চামার-সুতার,  ক্ষৌরকারসহ বিভিন্ন পেশা নির্দিষ্ট করে দেন

পেশাগুলো পরবর্তীতে বংশীয় পেশা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সেজন্যই আমরা কামার, কুমার, সুতারদের পৈত্রিক পেশা ধরে রাখতে দেখি। মুসলমানগণ সাধারণত এধরণের পেশা গ্রহণ করতেন না। বর্তমানে প্রয়োজনের তাগিদে মুসলমানগণও সেলুন, লন্ড্রী অন্যান্য ব্যবসার সাথে জড়িত হচ্ছেন দেবিদ্বারের বারুর গ্রামের লোকেরা সুতারের (কাঠ মিস্ত্র) পেশা গ্রহণ করেঅন্যান্য গ্রামের লোকদের পেশা পরিবর্তনে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন গ্রামের শতাধিক লোক কাঠ কাঠের ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন, যাদের অধিকাংশই মুসলমান
বারুর গ্রামের মিস্ত্রীরা দেবিদ্বার ছাড়াও  মুরাদনগর, বুড়িচং চান্দিনাতেও কাজ করে। | দক্ষতার কারণে একই কাজের জন্য অন্যান্যদের তুলনায় তাদের মজুরী বেশি। বারুরের শতাধি কাঠের কাজের সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন পূর্বে ব্যাপারে পথ নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন আলতব আলী আব্দুর রহিম বারুর লোকেরা শুধুমাত্র মিস্ত্রী হিসেবেই কাজ করছেনা; দেবিদ্বারের অধিকাংশ ফার্নিচারের দোকান তারা পরিচালনা করছেন কেউ কেউ করছেন কাঠ চেড়াই বা মিলের ব্যবসা ব্যাপারে ছন্দু মিয়া , তাহের মিয়ার কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য
মুসলমানদের সংখ্যা বেশী হলেও হিন্দু কর্মকারগণও পেশায় টিকে আছে। সুকুমার (৫৫) বল্লেন পুজির অভাবে নিজস্ব ব্যবসা দিতে পারছেন না তাই তাকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করতে হয়। দিলীপ জানান, আগে হাতুড়ি, বাটাল, বাইশ, বর্সা। (ছেদনযন্ত্র) চিকন বাটাল, নকশা বাটাল, রান্দা, করাত, কাজ করা হত। এখন উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। ফলে তাদের কাজের চাহিদা কমে গেছে
আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারকারী সেলিম মিস্ত্রী বলেন দেবিদ্বারের অন্য কোন গ্রামে এত বেশি মিস্ত্রী নেই আমাদের গ্রামের লোকেরা দেবিদ্বারের সর্বত্র কাঠের কাজ করে এটি আমাদের গর্ব  বয়স্ক লোকদের পাশাপাশি ছোট ছেলে দিলীপ জানান, আগে হাতুড়ি, বাটাল, বাইশ, বর্সা (ছেদনযন্ত্র) চিকন বাটাল, নকশা বাটাল, রান্দা, করাত, , কাজ করা হতো এখন উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারকরা হয়। মিস্ত্রীরা জানান,প্রতি মাসে একজন মিস্ত্রী অনায়াসে ১০/১২ হাজার টাকা আয় করতে পারে। ফলে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে
মমিনুল ইসলাম মোল্লা,নিউজ আর্কাইভ থেকে (দৈনিক রুপসী বাংলা,18/09/2008 )



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.