গ্রামীণ উন্নয়নে দেবিদ্ধারের এলাহাবাদ জনকল্যাণ সংঘ
![]() |
| FILE PHOTO |
কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বারের এলাহাবাদ একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। হযরত শাহজালালের (রাঃ) ও সফরসঙ্গীগণ এখানে এসে এ পূণ্যভূমির নাম রেখেছিলেন “আল্লাহবাদ“। আল্লাহবাদই বর্তমানে এলাহাবাদ। এলাহাবাদ জনকল্যাণ সংঘ এলাহাবাদের সব ধরনের জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। ১ জুলাই এবং ২০০০ ইং থেকে এ সংঘঠনটি পথ চলা শুরু করে।
| বর্তমানে এ সংগঠনের সভাপতি খোরশেদ আলম মাষ্টার এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম। সাধারণ সম্পাদক দীর্ঘ ৪৮ বছর পূর্বে এলাহাবাদ “বয়েজ ক্লাব’ নামে একটি সংগঠনের জন্ম দিয়েছিলেন। ১৯৫৪ সালের ক্লাবটি ছিল পাঠাগার ভিত্তিক। এবার না পাঠাগারের সাথে সংযুক্ত করেছেন গ্রামীণ উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন।
তবে এলাহাবাদের সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্য ইতিহাস অনেক পুরনো। বৃটিশ আমলে ভূইয়া জমিদারদের খাজনার অত্যাচার থেকে প্রজাদের রক্ষা করার জন্য “এলাহাবাদ প্রজা কল্যাণ সমিতি’ গঠন করা হয়েছিল। এজন্য খাজনা বন্ধের আন্দোলন করার জন্য জেল খেটেছেন সমিতির সভাপতি আনিস খান। তৎকালীন সময়ে ছাদির বক্স ভূইয়া, আসাদ উল্লাহ সহ কয়েকজন ‘ধর্মগোলা’ গঠন করে অভাবের সময় দরিদ্রদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করতেন।
জনাব আবুল হাশেম পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকুরী করতেন। বর্তমানে অবসর জীবন যাপন করছেন। সংগঠন করার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসর নেয়ার আগে ছুটিতে বাড়ী এলে একটি দোকানেই আড্ডা দেই ,পত্রিকা পড়ি এবং আলোচনা হয় গ্রামের বিভিন্ন বিষয়ে। একদিন বাল্যকালের ‘এবিসি'র মতো বর্তমান বৃদ্ধকালের উপযোগী একটি সমিতি গঠনের প্রস্তুাব দিলাম সেই থেকে শুরু।
- জনকল্যাণ সংঘ প্রতিষ্ঠার আহ্বানে এগিয়ে আসেন সর্বজনাব খুরিশদ আলম ভূইয়া, জামাল হোসেন ভূইয়া, আলমগীর কবির ভূইয়া ও মোস্তাকুর রহমান ফুল মিয়া সহ আরো অনেকে। দুর্গম পথ পেরিয়ে সংস্থাটি ১ জুলাই পালন করেছে ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বর্তমানে সংঘের সদস্য সংখ্যা ৬৩ জন।
এলাহাবাদ জনকল্যাণ সংঘ শিক্ষা, সাহিত্য সংস্কৃতির প্রসার, দারিদ্র বিমোচন, জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য প্রতি বছর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়।
এছাড়া বিনামূল্যে চক্ষু শিবির ও স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হয় । এছাড়া এলাহাবাদ বাজারের রাস্তা মেরামতের জন্য ১৩০০০ টাকা খরচ করা হয়েছে। অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের ৪০০০ টাকা দেয়া হয়েছে। এবং ৫০ জন কন্যা দায়গ্রস্ত পিতাকে কন্যার বিয়ের সময় সাহায্য করা হয়েছে। শুধুমাত্র সংঘের সদস্যদের চাঁদা সংগৃহীত অর্থের মাধ্যমে সংঘের ব্যায় নির্বাহ হচ্ছে।
| সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই সংগঠনটির আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং জনকল্যাণের ফান্ড গঠনের জন্য নার্সারী মৎস্য ও পশু পালনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলোর তত্ত্বাবধানে রয়েছে ওসমান আলী, আঃ মান্নান ও আঃ করিম।এ থেকে অর্জিত অর্থ জনকল্যাণে ব্যয় করা হয়। এছাড়া মাসিক কিস্তি ভিত্তিক সঞ্চয় প্রকল্প চালু রয়েছে।
“এজকসের “ উদ্যোগে একটি গণ পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। এখানে ৫০০ বই এবং দৈনিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন সামায়িকী রয়েছে। এ সংগঠনের সমস্যা ও ভবিষ্যৎ
পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে এলাহাবাদ জনকল্যাণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক জনাব আবুল হাশেম জানান- সকল শ্রেণীর জনসাধারনের আন্তরিক সহযোগিতা আছে। তবে সমস্যা একটাই, আর সেটি হচ্ছে টাকার সমস্যা। বর্তমানে বার্ষিক ১০,০০০ টাকার জমি ভাড়া দিয়ে সংগঠনের কার্যক্রম চলছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও দারিদ্র বিমোচনে অধিক অর্থ খরচ করা যায় না। তবে অর্থের সংস্থান হলে আরো বড় ধরনের দারিদ্র বিমোচন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে ।
|“এজকাসের “ সভাপতি মোঃ খুরশেদ আলম - ভূইয়া বলেন আমাদের সংগঠনের মূল মন্ত্র হচ্ছে সকল ফুলকে ফুটতে দাও সকল ফুলের সুরভী বিলাতে দাও। ধুতরা ফুলের বিষাক্ত ছোঁয়া যেন ফুল অনুরাগীর ক্ষতি না করে। আজ থেকে প্রায় ১৩শ বছর আগে হযরত শাহাজালালের (রাঃ) ইসলাম প্রচারক সফর সঙ্গী মঞ্জু শাহ্ ,শাহ্ জামাল ও শাহ কামালের স্মৃতি ধন্য এই এলাহাবাদ (উট খাড়া) । এক সময় ইসলামের আলো ছড়িয়েছে ন্যাপ প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহম্মদের জন্মভূমি বর্তমান এলাহাবাদের জনকল্যাণ সংঘ শুধু মাত্র এই গ্রামই নয় বরং সমগ্র দেশের উন্নয়নে পথ প্রদর্শকের ভূমিকা রাখবে জনকল্যাণ সংঘ।
মমিনুল ইসলাম মোল্লা, নিউজ আর্কাইভস থেকে সাপ্তাহিক
আমোদ,22/07/2004
