দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন আহমেদ বালিকা বিদ্যালয়


:

বিভগ-নারী, শিক্ষা

কুমিল্লায় নারী জাগরণের পথিকৃত বিশ্বের একমাত্র মহিলা নবাব বেগম ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী (১৮৩৪-১৯০৩) কুমিল্লায় বেগম রোকেয়ার জন্মের বছর পূর্বে ১৮৭৩ সালে নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বিদ্যালয় সম্পর্কে বাংলাপিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছেএটি উপমহাদেশে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত মেয়েদের প্রাচীনতম স্কুলগুলোর অন্যতম।
কুমিল্লা জেলার আওতাধীন দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি দেবিদ্বার উপজেলা অফিসের উত্তর দিকে অবস্থিত। ১৯৭২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে বিদ্যালয়টি ছিল জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয়। .১১.১৯৭২ সালে এটি জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করে। ..১৯৭৩ সালে  বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিণত হয়। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে ভোকেশনাল শাখা অনুমোদন লাভ করে। সমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টির পূর্বে দেবিদ্বার আজগর আলী মুন্সি গার্লস হাই স্কুল, পশ্চিমে বাঙ্গুরী হাই স্কুল, উত্তরে দেবিদ্বার রেয়াজ উদ্দিন পাইলট হাই স্কুল এবং পশ্চিমে হাজী আবিদ আলী হাই স্কুল অবস্থিত
পটভূমি: নারী জাগরণের পথিকৃত বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন (১৮৮০-১৯৩২) তিনি ১৯০৯ সালের অক্টোবর জন ছাত্রী নিয়ে ভাগলপুরেশাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলস্থাপন করেন। কুমিল্লায় নারী জাগরণের পথিকৃত বিশ্বের একমাত্র মহিলা নবাব বেগম ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী (১৮৩৪-১৯০৩) কুমিল্লায় বেগম রোকেয়ার জন্মের বছর পূর্বে ১৮৭৩ সালে নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বিদ্যালয় সম্পর্কে বাংলাপিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছেএটি উপমহাদেশে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত মেয়েদের প্রাচীনতম স্কুলগুলোর অন্যতম।কুমিল্লা সদরের পর উপজেলাগুলোতে প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দেবিদ্বার গার্লস স্কুলটি অন্যতম।           
বিদ্যালয়ের ছাত্রী সংখ্যা: প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে উক্ত বিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩০ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ৩২১,   ৭ম-৩৩৯, ৮ম-৩২৩, ৯ম-১৭১, এবং ১ম শ্রেণীতে ১৮৯ জন ছাত্রী লেখাপড়া করে। বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রীদের অভিভাবকদের সাথে টেলিফোনে আলাপ করা হয়। এছাড়া পত্র যোগাযোগের মাধ্যমে উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের     বালিকাদের উপস্থিতির হার ৮৬% ক্লাস ক্যাপ্টিনের মাধ্যমে এখানে শ্রেণী নেতৃত্বের বিধান চালু রাখা হয়েছে। সেজন্য বছরের শুরুতে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত সকল শ্রেণীতে একজন করে শ্রেণী ক্যাপ্টিন নির্বাচিত করা হয়। ক্যাপ্টিন নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বেছে নেয়া হয়। গরীব মেধাবী ছাত্রীরা এখানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৩০% ছাত্রীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়। ২০১১-২০১২ অর্থবছরে প্রায় ৪০০ জন ছাত্রী উপবৃত্তি পাচ্ছে
শ্রেণীকক্ষের বিবরণ:৩টি অফিস কক্ষ, ১টি বিজ্ঞান ল্যাব, ১টি কম্পিউটার ল্যাব, ১টি নামাজের ঘর, ১টি লাইব্রেরি, ২০টি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে।  বিদ্যালয়ে যথেষ্ট পরিমাণে শিক্ষা সামগ্রী রয়েছে। ছাত্রীদের পড়া বুঝিয়ে দেয়ার সুবিধার্থে ব্ল্যাকবোর্ডের কোন বিকল্প নেই। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ব্ল্যাকবোর্ড রয়েছে ১৭টি, হোয়াইট বোর্ড রয়েছে ১টি, এছাড়া চার্ট, মডেল, গ্লোব, পোস্টার শিক্ষা সামগ্রী হিসেবে ব্যবহূত হয়
ছাত্রীদের বক্তব্য:৬ষ্ঠ শ্রেণীর ক্লাস ক্যাপ্টিন নূরজাহান খানম বলে, আমরা আমাদের বিদ্যালয়কে শুধুমাত্র দেবিদ্বারের মধ্যে নয় সারাদেশের   মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। ৭ম শ্রেণীর শ্রেণী নেতা সায়মা ইসলাম বলে, বিদ্যালয়ের কোন ছাত্রীর বিএ পাসের আগে বিয়ে হউক তা চাই না। ৮ম শ্রেণীর ক্লাস ক্যাপ্টিন কানিজ ফাতিমা বলে, বিদ্যালয়ে কোন ছাত্রীনিবাস নেই তাই দূরের ছাত্রীরা এখানে ভর্তি হতে চায় না। তাই এখানে একটি হোস্টেল নির্মাণ করা প্রয়োজন। ৯ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী সিফাত সায়মা বলে, আমাদের বিদ্যালয়টি খেলাধুলায় ভাল হলেও আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা আমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারছি না। ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী তানিয়া আক্তার বলে, আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই
প্রধান শিক্ষিকার
বক্তব্য
দেবিদ্বার মফিজ উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা জ্ঞানের আলো প্রসারিত হয়েছে এবং সৃষ্টি হয়েছে অনেক বিদুষি মহিলা। বিদ্যালয়ের সমস্যার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, ছাত্রীদের কোন হলরুম নেই, ছাত্রীদের থাকার জন্য কোন ছাত্রীনিবাস নেই। আপনি বিদ্যালয়টিকে লেখাপড়ার আদর্শ প্রতিষ্ঠান মনে করেন কেন? প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিকতা, ছাত্রীদের গভীর মনোযোগ, অভিভাবকদের সচেতনতা, ম্যানেজিং কমিটির নজরদারির কারণে বিদ্যালয়টি শুধুমাত্র বালিকা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যেই নয় জেএসসি এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করছে
  লেখকমমিনুল ইসলাম মোল্লা  |  বুধবার১৪ নভেম্বর ২০১২৩০ কার্তিক ১৪১৯























  



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.