পুরুষের অনুগত থাকা মুমিন নারীর কর্তব্য




মমিনুল ইসলাম মোল্লা : পুরুষ পরিবারের কর্তা। তাই  ইসলামি পরিবারের নেতৃত্ব দেবে পুরুষ। এক্ষেত্রে মহিলাদের বাড়বাড়ি করা উচিত নয়। সুরা নিসাতে ( আয়াত-৩৪) আল্লহ বলেন, পুরুষরা নারীদের অবলম্বন। যেহেতু আল্লাহ তাদের এক শ্রেণিকে অন্য শ্রেণির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।আমরা নিজের জন্য এবং পরিবার বর্গের জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করব। কলুষিত সমাজে বসবাস করার কারণে পরিবারের সদস্যরা যাতে নেংরা পরিবেশে প্রভাবিত না হতে পারে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত নামাজ পড়লে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিীর পরিবর্তন আসবে। তাদের মূল্যবোধ বদলে যাবে , তারা পবিত্র পরিচ্ছন্ন রিযিকের ওপর সবর করে পরিতুষ্ট হবে ঈমান তাকওয়ার মাধ্যমে তাকওয়া হচ্ছে দুনিয়া আখিরাতে সাফল্য লাভের স্থায়ী শেষ মাধ্যম। স্ত্রী- সন্তানদেরকে নামাযের আদেশ দিতে হবে। সন্তানরা যেন নিজেদের অভাব অনটন দুরাবস্থা মোকাবেলায় দুনিয়ালোভীদেও ভোগ- বিলিাসিতা দেখে মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে না পড়ে সেজন্য তাদের ঈমানী শক্তি বৃদ্দি করতে হবে। সংসারে স্বামী হচ্ছেন পরিচালক আর স্ত্রী হচ্ছেন পরিচালক। স্ত্রীর দায়িত্ব অনেক। প্রথমত স্বামী যৌন মিলনের ইচ্ছা ব্যক্ত করলে স্ত্রীকে সঙ্গে সঙ্গেই তার আনুগত্য করতে হবে। দ্বিতীয়ত স্ত্রী স্বামী গৃহে এমন কোন লোককে আসা যাওয়ার সুযোগ দেবেন না;যার আসা যাওয়াকে স্বামী পছন্দ করেন না স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাকে তার বিশ্বাসভাজন হতে হবে। তার কোন আমানত খেয়ানত করতে পারবে না।
বিয়ের ক্ষেত্রে মুমিন নারীরা যেমন মুমিন পুরুষকে প্রাধান্য দেবে তেমনি পুরুষরাও বিয়ের ক্ষেত্রে পূণ্যবান নারীকে পছন্দ করবে। এক্ষত্রে ধনবান ফাসেক কিংবা মুশরিক নারী পুরুষ আপক্ষো নেককার দাস- দাসী অতি উত্তম। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন বলেন, দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চিরিত্র পুরুষের জন্য, আর দুশ্চরিত্রা পুরুষ  দুশ্চরিত্রা  নারীর জন্য, আর সচ্ছরিত্রা নারী সচ্চরিত্রা পুরুষের জন্য , আর সচ্ছরিত্র পুরুষ সচ্ছরিত্রা নারীর জন্য। ( সূরা নূর -২৬)সূরা নিসার বঙ্গানুবাদে ( হাফেজ মুনির উদ্দিন আহমদ) বলা হয়েছে, … অতএব সতী সাধ্বী নারী হবে ( একান্ত) অনুগত,  ( পুরুষদের) অনুপস্থিতিতে তারা স্বয়ং আল্লাহর তত্বাবধানে নিজেদের ইজ্জত-আবরু রক্ষণাবেক্ষণ করবে। পুরুষ পরিবারের কর্তা হিসেবে পরিবারের সবাইকে ইসলামী আকিদা অনুযায়ী পরিচালিত করবে। অন্যথায় সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুরা জুমার  ১৫নং আয়াতে অধল্লাহ বলেন, অতএব তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইচ্ছা তার ইবাদত কর। বলুন, কেয়ামতের দিন তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে যারা নিজেদের পরিবার বর্গের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, জেনে রাখ , এটাই সুস্পষ্ট ক্ষতি। আয়াতে কাফের মুশরিকদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বলতে যারা এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করে তাদেরকে বুঝানো হয়েছে। তারা মনে করে তাদেরকে পরকালে কোন হিসাব দিতে হবে না। অথবা হিসেব নিকেশের সময় অন্য কেউ এসে সাহায্য করবে।এ ধরণের ব্যাক্তি শুধু মাত্র নিজরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, সেই স্ত্রী সর্বোত্তম , যাকে দেখলে তোমার মন আনন্দে ভরে যায়। তুমি তাকে কোন আদেশ করলে সে তোমার আনুগত্য করে। আর তুমি ঘরে না থাকলে সে তোমার অনুপস্থিতিতে তোমার ধন সম্পদেরও তার নিজের হেফাজত করে।তবে একথা মনে রাখতে হবে যে ধর্মীয় বিধি বিধানের বাইরে কোন আদেশ দেয়া যাবে না। এছাড়া ধরণের আদেশ মানতে স্ত্রী বাধ্য নন। বোখারি শরিফে বর্ণিত হয়েছে -একজন পুরুষ তার পরিবার পরিজনের দায়িত্তশীল কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী স্বামীর ঘরের এবং তার সন্তানের দায়িত্বশীল কাজেই সে তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। পবিত্র কুরআন শরিফের সুরা নিসার ৩৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে, পুরুষরা হচ্ছে নারীদের কাজকর্মের ওপর প্রহরী, কারণ আল্লাহতায়ালা এদের একজনকে আরেকজনের ওপর কিছু বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছেন।আল্লাহ আরো বলেছেন, আর যে নারীদেও ক্ষেত্রে তাদের অবাধ্যতা অধশংকা করো তাদের উপদেশ দাও, আর শয্যায় তাদের একা ফেলে রাখো। আর তাদের প্রহার কর। তারপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়ে যায় তাদের উপর নির্যাতন চালানোর জন্য বাহানা তালাশ করোনা। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখে অধল্লাহ সর্বজ্ঞাত মহিমাময়। একজন মুমিন পুরুষ তার পরিবারের মধ্যে ইসলামি অনুশাসনের বিস্তৃতি ঘটাবে। স্ত্রী পরিবার সঠিকভাবে আমল না করলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আল্লাহ যখন লু (আঃ) এর কওমের ওপর আজাব দেন তখন তার স্ত্রীকে তিনি রক্ষা করতে পারেন নি। পবিত্র কুরআনে আছে আমি তাকে তার পরিবার বর্গকে রক্ষা করবে। তার স্ত্রীকে ছাড়া , সে ছিল পেছনে পড়াদের অন্তর্ভুক্ত। সুরা আততাহরিম এর নং আয়াতে বলা হয়েছে -মুমিনগণ তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা করো যার ইন্ধন হবে মানুষ প্রস্তর। মহিলাদের উদ্দেশ্যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, হে নারী সমাজ! তোমরা দান করো। কারণ তোমাদের বেশিরভাগই জাহান্নামের জ্বালানী হবে। একথা শুনে এক মহিলা দাঁড়িয়ে নিবেদন করলেন ওগো আল্লাহর রাসুল (সঃ) এমনটি কেন হবে? তিনি বল্লেন, কারণ তোমরা অধিক অধিক বদনাম করে বেড়াও এবং স্বামীর অকৃতজ্ঞতা করে থাকো”  সন্তানের বয়স বছর হলে তাকে নামাজ পড়ার জন্য আদেশ করতে হবে , ১০ বছরের মধ্যে নামাজ না পড়লে তাকে বেত্রাঘাত করার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু স্ত্রী যদি নামাজ না পড়ে ,পর্দা না করে তাহলে তাকে কি শাস্তি দেয়া যাবে? নাকি নিরবে সবকিছু সহ্য করতে হবে? যেহেতু পরিবারের সদস্যদের জন্য পরিবারের কর্তাকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে সেহেতু তিনি যে কোন উপায়েই হোকনা কেন তাদেরকে পুরোপুরি ইসলামের পথে দাখিল করবেন, এটা তার অপরিহার্য কর্তব্য
লেখকঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের  প্রভাষক , সাংবাদিক   ধর্মীয় গবেষক, কুমিল্লা
পুরুষের অনুগত থাকা মুমিন নারীর কর্তব্য
পুরুষের অনুগত থাকা মুমিন নারীর কর্তব্য


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.