মরনোত্তর চক্ষুদান ও অমরত্ব লাভ

মরনোত্তর চক্ষুদান ও অমরত্ব লাভ

”মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভূবনে, মানবের মাঝে আমি বাচিবার চাই।” কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনকে ভালোবেসে একথা লিখেছিলেন। সত্যি বলতে কি আমরা দুনিয়াতে যত জ্বালা যন্ত্রনাই ভোগ করিনা কেন কেউ কিন্তু পৃথিবী ছেড়ে যেতে চাইনা। কিন্তু মৃত্যু অনস্বীকার্য।

পবিত্র কোরআন শরীফে বলি হয়েছে ”কুল্লু নাসসিন জায়কাতুল মাউত। প্রত্যেক মানুষকে একদিন মৃত্যুর পেয়ালা পান করতে হবে। ইংরেজীতে বলা হয় - ঘড়নড়ফু পধহ বংপধঢ়ব ভৎড়স ফবধঃয. তাই মানুষকে অমরত্বের পন্থা খুঁজতে হয়। কেউ কেউ অমরত্ব লাভ করেন বৈকি। কিন্তু দৈহিক না আত্বিক।
বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার সুযোগে মানুষ মৃত্যুকে জয় করতে না পারলেও দৈহিক অমরত্ব প্রদানের সুযোগ করে দিয়েছে। যা একমাত্র মরোণত্তর চক্ষুদানের মাধ্যমে সম্ভব। কিন্তু আমাদের অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের কারনে মরনোত্তর চক্ষুদান কার্যক্রম সম্প্রসারিত হতে পারছে না।
বাংলাদেশ একটি গরীব দেশ। দারিদ্রতা আমাদের জীবন যাত্রায় নেকিবাচত প্রভাব ফেলেছে। আমাদের দেহে শক্তি যোগায় খাদ্য। প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহনের মাধ্যমে আমরা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারি।
একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন যে পরিমানে ক্যালরি গ্রহন করা দরকার দারিদ্রের কারনে তা তারা পারে না। ক্যালরি ঘাটতি জনিত কারনে স্বাস্থ্যবান সন্তান ভূমিষ্ট হয় না। বাংলাদেশের ৯৩% শিশুই অপুষ্টি নিয়ে জন্ম গ্রহন করে। এছাড়া বিকালাঙ্গ শিশুও জন্ম গ্রহন করে। বিকালাঙ্গদের অধিকাংশই দৃষ্টি শক্তিহীন।
বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে আমাদের দেহ গঠিত। দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো দেহের অভ্যন্তরে থাকলেও হাত, পা, চোখ সহ পঞ্চ ইন্দ্রিয় বাইরে অবস্থিত। দেহের বাইরের অঙ্গগুলোর মধ্যে চোখ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। চোখ হল দেহের দর্পন। চোখের গুরুত্ব কতটুকু তা আমরা এক মিনিট চোখ বন্ধ করে চারিদিকে তাকালেই বুঝতে পারি।
চোখ অতি প্রয়োজনীয় বস্তু। আমরা চোখের প্রতি কতটুকু সচেতন ? বাংলাদেশের অন্ধ লোকের সংখ্যা কম নয়। এখানে দু’ধরনের অন্ধ লোক দেখা যায়। কিছু কিছু লোক অন্ধ অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করে। তারা প্রথিবীর আলো দেখতে পায় না। তাছাড়া আকস্মিক দূর্ঘটনায় বা রোগ ব্যাদিতে আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে যায়।
চোখকে ভাল রাখতে হলে চোখের যতœ নিতে হবে। দুভাবে চোখের যতœ নেয়া যায়। প্রথমত - চোখের শক্তি বৃদ্ধি করে। আর এজন্য প্রয়োজন সুষম খাদ্য গ্রহণ আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরনের জন্য স্বেদসার বা শর্করা, আমিষ, ¯েœহজাতীয়, ভিটামিন, লবন ও পান পয়োজন। ভিটামিন বিভিন্নভাবে আমাদের দেহে অবদান রাখে। ভিটামিন আবার বিভিন্নভাবে বিভক্ত। ভিটামিন ”এ” এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়।
অনেকের রাত জাগার অ্যভাস আছে। যা চোখের জন্য ক্ষতিকর। একজন সুস্থ লোকের জন্য ৬-৮ ঘন্টা ঘুম আব্যশক। এতে চোখের স¦াস্থ্য ভালো থাকে নিয়মিত চোখের যতন না নিলে চোখের  দৃষ্টি শক্তি হৃাস পেতে পারে। আমাদের উদাসিনতা ও অজ্ঞতার জন্য অনেকের চোখের আলো নিভে যায়।এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা বাসÍবে ও অনেকের হয়ে যায়।
এক সময় কারো পা ভেঙ্গে গেলে একটি সাদা ছাড়ই ছিল তার একমাত্র ভরসা। কিন্ত বর্তমানে কৃত্রিম পা লাগিয়েও       
স্বাভাবিক ভাবে চলা যায়। তেমনি ভাবে চোখের ব্যাপারেও এখন আর আমরা শুধুমাত্র গøালাসের উপর নির্ভরশীল নাই।
 আম লোকেরা এখন কর্নিয়া সংযোজনের মাধ্যমে চোখ দেখতে পারে। একজন সদ্যমৃত লোকের চোখ সংযোগ করে সেটি অন্ধ লোকের চোখে লাগালে তিনি দেখতে পান। ১৯৫৯ সালে সর্ব প্রথম মৃত মানুষের কর্ণিয়া সংযোজন করা হয়। বাংলাদেশেও স্বল্প পরিসরে সংযোজন শুরু হয়েছে। আপনিও মরোণত্তর চক্ষু দান করে অমরত্ব লাভ করতে পারেন।




শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.