ধর্ষিতার ও আছে অধিকার

ধর্ষিতার ও আছে অধিকার


জৈবিক চাহিদা প্রত্যেক প্রাণীর রয়েছে। একে তা স্বীকার করার উপায় নেই। এ জন ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রত্যেকটি ধর্মে এ ব্যাপারে কঠোর নীতিমালা রয়েছে। তারপর ও প্রতিটি সমাজে কিছু না কিছু যৌন সংক্রান্ত অপরাধ ঘটতে দেখা যায়। এতে নারীর জীবনে বজ্রপাত ঘটে। কোন সন্তানের জন্মহলে তাকে সবার অজান্তে হত্যা করা হয়। এ অবস্থায় নিরাপরাধ সন্তানটির জীবন রক্ষায়ে কুমিল­ায় নারী নির্যাতন আদালতে রায়দেয়া হয়েছে ধর্ষিতার সন্তানের দায়িত্ব সরকার নেবে।

আমাদের দেশে প্রতি দিনই কোন না কোন নারীর সর্বনাশ হচ্ছে। এজন্য কোন কোন নারী হয়তো সামান্য দায়ী হতে পারে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীর কোন দোষ থাকেনা। তার পর ও সবার কাছে মনে হয় নারীর দোষেই হয়তো এমনটি ঘটেছে। হিন্দু ধর্মের হলে কেউ কেউ উচু গলায় বলেন, হয়তো পূর্ব জন্মে কোন পাপ করেছিল। তা না হলে প্রকাশ্য দিবালোকে এমন অঘটন ঘটবে কেন? এ ভাবে উদার পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো হয়। ধর্ষকদের সামাজিক প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং আর্থিক শক্তি বেশি হলে ঘটনাটা ধামাচাপা দেয়া হয়। ধর্ষিতার আত্বীয়- স্বজন এলাকার মাতাব্বর শেনীর লোকদের কাছে গেলে তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। যা হবার  তাতো হয়েই গেছে। তুমি তো মেয়ের ইজ্জত ফিরিয়ে আনতে পারবেনা। এছাড়া জনগনের মুখেও বন্ধ করতে পারবেনা। সুতরাং চুপ হয়ে যাও। মামলা মোকদ্যমা করেও লাভ নেই। একথা সত্যি, ধর্ষিতার প্রতি আমাদের সহানুভুতি কম। মনেকরুন বৃষ্টির কারণে খাল পাড়ের রাস্তাটি খুবই পিচ্ছিল।রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে  একজন  বৃদ্ধ লোক পা পিছলে রাস্তায় পড়ে  গেলেন ।এখন রাস্তার  পাশের ে দাকানদাররা  দৌড়ে গিয়ে তাকে উঠিয়ে  কোথাও ব্যাথা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলেন । একই যায়গায় কোন ষোড়শী আছাড় খেয়ে খাে ল পড়ে  গেলেও  কেউ তাকে   সাহায্য  করতে যাবেনা। বরং লোকজন এনিয়ে হাসি তামাসায় মেতে উঠবে।

ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী অবৈধ যৌন স¤পর্কের সর্বোচ্চ শাস্তি, পাথর ছুড়ে অথবা বেত্রাঘাত করে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা ইসলামী দেশগুলোতে এ আইন মেনে চলার কারনে কোন অঘটন ঘটেনা। গত সরকারের আমলে জনৈক মানিক নামের একজন ছাত্রনেতা ধর্ষনের সে‎ঞ্জুরী করে সবাইকে মিষ্টিমুখ করিয়েছিল। সবাই হাসতে হাসতে মিষ্টি খেয়েছে। ধর্ষিতা মেয়েদের কথা তাদের কারও মনে অনুভুতি জাগায়নি বরং পৌরুষের প্রতীক হিসাবে মানিককে বাহবা দিয়েছে।
অধিকাংশ গার্জিয়ান এধরনের সমস্যায় থানা-পুলিশ করতে চান না। ব্যাপারটি যতটা জানাজানি হয় ততই ক্ষতিকর ভেবে সামাজিক শালিসে রাযিহন। কিন্তু গ্রাম বিচারকরা প্রভাবিত হওয়য় অধিকাংশ ক্ষেত্রে ন্যায্য বিচার পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে ভিক্টিমের আত্যাহত্যা করা ছারা আর কোন উপায় থাকেনা। কোন কোন সময় বিচার না পেয়ে ধর্ষিতারে পিতা আত্যাহত্যা করেন অথবা পরিবার নিয়ে অন্য কোথাও চলে যেতে বাধ্যহন। ধর্ষিতা বেচে থাকলেও তাকে আজীবন কুমারী থাকতে হয়।
বিবাহের ধর্ষিকাবআ ববাড তকবহড  জন্ম নিলে এ মেয়েটি কোন দোষে দুষ্ঠ নয়। তারপর ও সমাজে তাকে নীচু হয়ে চলতে হয়। এ সন্তানের লালন পালন নিয়ে ও সমস্যা দেখা দেয়। এ ব্যাপারে সরকার পুরোপুরি দায়িত্ব গ্রহন করলে ধর্ষিতা মায়ের দুঃখ কিছুটা লাগব হবে। এক সময় ধর্ষন সংক্রান্ত খবর নিয়ে একশ্রেনীর সংবাদ ব্যবসায়ীরা নিকৃষ্ট প্রতিযোগিতায় অবতীর্ন হতো। ধর্ষন বাহিনী কত গলপআকারে  লিখে এক প্রকার বিকৃত আনন্দের স্বাদ পাঠকদের দিত। এতে সর্বনাষা মেয়েটির কাহিনি সারা দেশে প্রচার হতো। সরকার এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের ব্যাপারে নিষেদাঙ্গা আরোপ এবং ধর্ষিতার পরিচয় গোপন করার বাধ্যাবাদকতা আরোপ করে। ফলে বর্তমানে কেউ ধর্ষন কাহিনি নিয়ে বানিজ্য করতে পারে না। 
ধর্ষিতা মেয়েদের বিবাহ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এ ব্যাপারে সামাজিক সহযোগিতার পাসাপাশি সরকারি সহযোগিতা দিতে হবে। ধর্ষিতাকে বিবাহ করলে স্বামীকে সরকারিভাবে সহযোগিতা দিলে মেয়েটির বিয়েতে কোন জটিল সমস্যা হবে না। অন্যথায় বিবাহ বঞ্চিত নারীটির বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
সমাজের কুৎসিৎ ও কলঙ্কময় ঘটনা ধর্ষন। যৌন শৃঙ্খলাহীন সমাজ মতাদর্শ সমাজ হতে পারে না। এতে আদিম যুগের অসভ্য বর্বর ও পশু সমাজের সাথেই তুলনা করা যায়। তাই ধর্ষনারোধে সরকারকে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ধর্ষিতার সন্তানের লালন পালনের পাশাপাশি ধর্ষিতার বিয়ের ব্যাপারে ও আমাদের ভাবা উচিত।


















শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.