দেবিদ্বার থানা, কুমিল্লা, বাংলাদেশ।


দেবিদ্বার থানা, কুমিল্লা, বাংলাদেশ 

দেবিদ্বার থানা, কুমিল্লা, বাংলাদেশ।
ভৌগলিক অবস্থান:
দেবিদ্বার উপজেলার অবস্থান উত্তর অক্ষাংশের ২৩°২৯' এবং ২৩°৪২' এর মধ্যে ৯০°৫৯' এবং ৯১°০৫' দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। উপজেলার উত্তরে ব্রাম্মনপাড়া মুরাদনগর উপজেলা, দক্ষিণাংশে চান্দিনা উপজেলা, পশ্চিমে মুরাদনগর উপজেলা, পূর্বে বুড়িচং ব্রাম্মনপাড়া উপজেলা।

ইউনিয়নসমূহ:
সুবিল ইউনিয়ন
ফতেহাবাদ ইউনিয়ন
রসুলপুর ইউনিয়ন
বড়শালঘর ইউনিয়ন
ইউছুফপুর ইউনিয়ন
এলাহাবাদ ইউনিয়ন
গুনাইঘর (উত্তর) ইউনিয়ন
গুনাইঘর (দক্ষিণ) ইউনিয়ন
রাজামেহার ইউনিয়ন
ধামতী ইউনিয়ন
জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন
মোহনপুর ইউনিয়ন
ভানী ইউনিয়ন
বড়কামতা ইউনিয়ন

দেবিদ্বার উপজেলার পটভূমি:

কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলা ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে ১৯১৭ সালের ১৫ জুলাই প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠিত বছরের মাস পর ২১ সেপ্টেম্বর গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পর ১৯১৮ সালের জানুয়ারী থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেবিদ্বার থানার কার্যক্রম চালু হয়।


উপজেলার নামকরণ নিয়ে তিনটি ভিন্ন মত প্রচলিত আছে।

১-
সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার ভাটটুরিয়ার দেবীকোটের রাজ পরিবারের ভ্রাতৃকলহে বানরাজা অঞ্চলে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বানরাজাদেবীকোটথেকে আসায় দেবীকোটের নামানুসারে কালক্রমে দেবীকোট থেকে আজকের দেবিদ্বারের নামকরণ করা হয়েছে।

২-
এক্ষেত্রে ভিন্ন কথাও রয়েছে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে বৃটিশ শাসনামলে বৃটিশ ক্যাপ্টেন জন ডেভিড ত্রীপুরার চিতনা নামক স্থান থেকে একটি নৌবহর নিয়ে গোমতী নদী পথে ঢাকা যাওয়ার সময় বর্তমান দেবিদ্বারের ভিংলাবাড়ি নামক স্থানে বানরাজার সৈন্যদের সাথে ক্যাপ্টেন ডেভিড তার সৈন্যদের নিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। সময় যুদ্ধের নাম ডেভিড ওয়ার (ডেভিড যুদ্ধ) নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ওই নামানুসারে ডেভিড ওয়ার থেকে আজকের দেবিদ্বার নামে পরিচিতি লাভ করে।


৩-
৩য় মতাদর্শীদের মতে যতদূর জানা যায় উপজেলা সদরে বহু দেব-দেবীর পূজা অর্চনা হতো। ফলশ্রম্নতিতে উপজেলার নামকরণ হয় দেবিদ্বার।

ভাষা সংষ্কৃতি:
দেবিদ্বার উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ভৌগলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই উপজেলাকে ঘিরে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, ঢাকা বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য উপজেলাসমূহ। এখানে ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলার মতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন কথ্য ভাষায় মহাপ্রাণধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত, অর্থা ভাষা সহজীকরণের প্রবণতা রয়েছে। দেবিদ্বার উপজেলার আঞ্চলিক ভাষার সাথে সন্নিহিত ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, ঢাকার ভাষার অনেকটা সাযুজ্য রয়েছে। মেঘনা-গোমতী নদীর গতিপ্রকৃতিএবং লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে দেবিদ্বারের মানুষের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
এই এলাকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে দেবিদ্বারর সভ্যতা বহুপ্রাচীন। এই এলাকায় প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন সভ্যতার বাহক হিসেবে দেদীপ্যমান। সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে দেবিদ্বারের অবদানও অনস্বীকার্য। জাতীয় কবি নজরুল, সুরসম্রাট ওস্তাদআলাউদ্দিন খান, ওস্তাদ আয়েত আলী খান, ওস্তাদ আকবর আলী খান প্রমুখ ভুবনবিখ্যাত সংগীতজ্ঞদের স্মৃতি বিজড়িত দেবিদ্বার।

যেসব সরকারী সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা দেবিদ্বারে কাজ করছে সেগুলো হলোঃ
* উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী, দেবিদ্বার।
* সরকারী গণ গ্রন্থাগার, দেবিদ্বার।

দর্শনীয় স্থান সমূহ:
নূর মানিকচর জামে মসজিদ
বায়তুল আজগর জামে মসজিদ (গুনাইঘর)
উটখাড়া মাজার
নিজাম উদ্দিনের মাজার (বড়শালঘর)
ওয়াহেদ পুরের দীঘি(ওয়াহেদ পুর)
কালাইশার মাজার (ওয়াহেদ পুর)
গোমতী ব্রিজ (গোমতি বাঁধের উপর)


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.