কুমিল্লার মুরাদনগরে ৪ লক্ষ টাকা ব্যায়ে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মিত
মমিনুল ইসলাম মোল্লাকুমিল্লার মুরাদনগরের আন্দিকুট ইউনিয়নে একটি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। কুরবানপুর টু গাঙ্গেরকুট সড়কের পুর্বপাশে হায়দরাবাদ সামছুল হক কলেজ ও বেগম জাহানারা হক ডিগ্রি কলেজের মাঝে এর অবস্থান। এ শহীদ মিনার নির্মাণে ব্যায় হয়েছে প্রায় ৪ (চার) লক্ষ টাকা। ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশা অনুযায়ী এটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর দৈর্ঘ (উত্তর-দক্ষিণে ) ৩৪ ফুট এবং প্রস্থ (পুর্ব -পশ্চিমে) ১৮ ফুট। সমতল থেকে আড়াই ফুট উচ্চতায় এর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। বেদী মূলের আয়তন ৬১২ বর্গফুট , বেদীমূলের উপর ৫টি বেদী স্থান পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৪টি আকাশের দিকে মাথা উঁচু করে দাাঁড়িয়ে রয়েছে, মাঝের বেদীটি সামনের ( পশ্চিম )দিকে ১৩৫ ডিগ্রি কোণে হেলানো অবস্থায় রয়েছে। ৫টি বেদীর প্রথম দুটির উচ্চতা ৮ ফিট মাঝেরটির উচ্চতা সামনের দিকের বাাঁকানো অংশসহ সাড়ে ১০ ফিট এবং সর্বশেষ দুটির উচ্চতা ৯ ফিট।
বেদীমূলের সামনে পঞ্চভূজাকৃতিতে ৪টি করে সিঁড়ি রয়েছে। ইট-সিমেন্ট নির্মিত এ শহীদ মিনারের স্তম্বগুলোতে ৩ সূতা ও ৪ সূতা পরিমাপের রড ব্যবহার করা হয়েছে। এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১১ ডিসেম্বর ১২ এবং এটি উদ্বোধন ২০ ফেব্রæয়ারি ২০১৩। শহীদ মিনারের উর্ধ্বমুখী স্তম্বগুলোর মাঝখানে সাদা রঙ্গের স্টেইনলেসস্টিল এর পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। লম্বা-লম্বি পাইপের সাথে পাশাপাশি পাইপও ব্যবহার করা হয়েছে। প্রধান বেদীতে ৪টি ও অন্যগুলোতে ২টি করে পাইপ ব্যবহার করায় এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মিনারের পূর্ব পার্শ্বে একটি মুক্ত মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। এর আয়তন ৩৪* ৬ বর্গফুট। শহীদ মিনারটির পশ্চিম পাশে একটি নয়নাভিরাম কলাপসিবল গেইট রয়েছে। গেইটটির উচ্চতা ৭ ফিট এর্ব এর প্রস্থ ৮ ফিট। গেইটটির দু পাশ গ্রীল দ্বারা দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে।মূলত উন্নতমানের টাইলস সুসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ব্যবহার করায় শহীদ মিনারটির শোভা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ১২শ (বারশ) বর্গফুট টাইলস শহীদ মিনারের বেদীতে, বেদীমূলে ও গেইটে ব্যবহার করা হয়েছে। টাইলসগুলোর অধিকাংশই কালো রঙের এবং কিছু অংশে অফহোয়াইট রঙ ব্য্যবহার করা হয়েছে। উর্ধমুখী স্তম্বগুলোতে ১০*১২ বর্গ ইঞ্চি আয়তনের কালো টাইলস স্থান পেয়েছে। সিড়িতে ১২*১২ বর্গ ইঞ্চি আয়তনের টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। একই কমপ্লেক্সে অবস্থিত হায়দরাবাদ বেগম জাহানারা হক ডিগ্রি কলেজ, সামছুল হক কলেজ, জাহানারা হক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় , মাছুম বিল্লাল মেমোরিয়াল মাদ্রাসা ও হায়দরাবাদ আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেনের প্রতিষ্ঠাতাও দানবীর সামছুল হক, আব্দুল আউয়ালা এবং মোঃ শাহআলমের যৌথ অর্থায়নে এটি নির্মিত হয়েছে। এটি নির্মাণে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ব্যায় হয়েছে। সামছুল হক সাহেব প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান কর্মকর্তা, কর্মচারী ও এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতায় এটি প্রতিষ্ঠায় সহযোগী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এর নির্মাণ শিল্পি মোখলেছুর রহমান (পিরোজপুর) এবং নির্মাণ কাজেসার্বক্ষণিকভাবে প্রকৌশল সহযোগীতায় ছিলেন সামছুল হক কলেজের জিটিডি বিষয়ের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান। চমৎকার মিনারটি দেখা এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রতিদিন বহু লোক অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসে মুরাদনগরের হায়দরাবাদে সমবেত হচ্ছেন।
লেখক কুমিল্লা। প্রভাষক, ক্যাম্পেনার সিডিএলজি এবং সহকারী সম্পাদক, দৃষ্টান্ত ডট কম