ত্বকের পরিচর্যায় অলিভ অয়েল



৪। কন্ডিশনারের পরিবর্তেও আপনি অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু করার পর হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল নিয়ে ভালো ভাবে দুই হাতে ঘষে ফেলুন। তারপর এটি আলতো করে চুলে লাগিয়ে নিন।

৫। আর প্রতি সপ্তাহে অন্ততপক্ষে একবার হালকা গরম অলিভ অয়েল চুলে ভালো ভাবে ম্যাসাজ করুন। এভাবে ২/৩ ঘন্টা চুলে তেল লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করুন। তারপর নিজেই লক্ষ করবেন শাইনি আর স্বাস্থ্যকর চুলের বাহার।

এভাবে বাসায় বসে আপনি ভেষজগুণসমৃদ্ধ অলিভ অয়েল ব্যবহারে চুলের যত্ন নিতে পারেন।


 


ত্বকে অলিভ অয়েলের উপকারিতা

অলিভ অয়েলে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস্ ত্বককে আলট্রা-ভায়োলেট রেডিয়েশন থেকে রক্ষা করে। এতে স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়। অলিভ অয়েলে আরো রয়েছে ভিটামিন এ এবং ই যা ত্বককে সতেজ রাখে। তাই, প্রতিদিন বাসায় ফিরে গোসল করার পর সামান্য পানির সাথে অলিভ ওয়েল মিশিয়ে সারা শরীরে ম্যাসেজ করুন। দেখবেন শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে এবং সারারাত শরীরে ভেজাভাব বজায় থাকবে। প্রতিদিন এভাবে অলিভ অয়েল দিয়ে শরীরের ত্বক ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে সহজে বলিরেখা পড়ে না।


পাশাপাশি শরীরের কোথাও কেটে গেলে বা আঁচড় লাগলে অলিভ অয়েল অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। একটি পরিষ্কার পাত্রে প্রয়োজনমত এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল, নারকেল তেল, ক্যালেনডুলা ও ল্যাভেন্ডার তেল, মোম, চা পাতা ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এটি ক্ষত সারাতে দারুণভাবে কাজ করে।


জলপাই তেল শিশুর ত্বকের জন্যও নিরাপদ। শিশুদের নিতম্ব থেকে র‌্যাশ দূর করতে সামান্য অলিভ ওয়েল মাখিয়ে দিন। যাদের ত্বকে চুলকানির সমস্যা রয়েছে তারা নির্দ্বিধায় এ তেল গায়ে মাখতে পারেন। অলিভ অয়েল অতিরিক্ত শুষ্ক, ছোপ ছোপ ত্বক কোমল ও মসৃণ করে। জলপাই তেলে রয়েছে হাইড্রেটিং এজেন্ট, যা শিশুর ত্বককে নরম করে তোলে।


 


অলিভ অয়েলের প্রকারভেদ

বাজারে মোটামুটি চার ধরনের অলিভ অয়েল পাওয়া যায়; ক্লাসিক বা ভার্জিন অলিভ অয়েল, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, অলিভ পোমেস অয়েল এবং লাইট ফ্লেভার অলিভ অয়েল। আমাদের প্রাত্যহিক রান্না-বান্নায় সয়াবিন বা সরিষার তেলের বিকল্প হিসেবে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারি।


চলুন দেখে নিই বিভিন্ন প্রকার অলিভ অয়েলের পুষ্টিগুণ-


এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল:


এটি সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের অলিভ অয়েল। রান্নায় স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। মাখনের বিকল্প আপনি হিসেবেও এটি খেতে পারেন। অন্যান্য ভেষজ তেলের তুলনায় এটি অধিক স্বাস্থ্যসম্মত। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল জলপাইয়ের আসল নির্যাস থেকে প্রস্তুত করা হয়। এবং এতে অলিক অ্যাসিডের পরিমাণও অনেক কম। একেবারে খাঁটি তেল হিসেবে আপনি এটি গ্রহণ করতে পারেন।


এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে রয়েছে জিরো ক্যালোরি। ফলে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। রান্নায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের ব্যবহার ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি দেহে ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে। পাশাপাশি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনলস্ এবং ফ্যাট। এটি আমাদের দেহকে নানারকম রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করে।


ক্লাসিক বা ভার্জিন অলিভ অয়েল:


রান্না-বান্নায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ক্লাসিক অলিভ অয়েল। এতে এসিডের পরিমাণ অত্যন্ত কম। পাস্তা, স্টার-ফ্রাইড ভেজিটেবল বা রাইস তৈরিতে ক্লাসিক অলিভ অয়েলের বিকল্প নেই। এটি ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও ভালো কাজ করে। ফলে চুল ও ত্বকে ব্যবহারের জন্যও ক্লাসিক অলিভ অয়েল উপযোগী।


অলিভ পোমেস অয়েল:


গন্ধহীনতা ও লঘু হলুদ রঙের কারণে অলিভ পোমেস রান্নার জন্য আদর্শ তেল। উচ্চ স্ফুটনাঙ্কের কারণে ডিপ ফ্রাইং-এর জন্য খুব ভালো এই তেল। পোলাও, পরোটা এমনকি পাকোড়া তৈরিতেও অলিভ পোমেস অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।


লাইট ফ্লেভার অলিভ অয়েল:


হালকা রং ও মৃদু গন্ধের জন্য সহজেই এই অলিভ অয়েল চিনতে পারবেন। এটি দিয়ে কন্টিনেন্টাল রান্না, ভাজি, রোস্ট বা বেকিং এমনকি যেকোনো রকম পদই অনায়াসে তৈরি করতে পারেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.