গরিবকে সাহায্য করি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যঃইসলাম/দানঃ-একজন মুসলমান সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখে। ইসলামের যাবতীয় ইবাদত

গরিবকে সাহায্য করি

গরিবকে সাহায্য করি 


গরিবকে সাহায্য করি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যঃইসলাম/দানঃ-একজন মুসলমান সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখে। ইসলামের যাবতীয় ইবাদত নেক আমলের মূল ভিত্তি হচ্ছে ঈমান। তাই প্রতিটি মুনলমান ঈমানের সঙ্গে মৃত্যু কামনা করে। আর জন্য তাকে প্রতিনিয়ত পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতিদিনের পরীক্ষায় পাস করেই জান্নাতে যাওয়া যাবে। কালিমায়ে তাইয়েবা কালিমায়ে শাহাদতের মূল বাণী মুখে উচ্চারণ, অন্তরে বিশ্বাস কর্মে পরিণত করার মাধ্যমেই মুমিন-মুত্তাকিন হওয়া যায়। একজন মুসলমানের ঈমানে দৃঢ়তা অবলম্বন করা উচিত। সাহাবায়ে কেরামের ঈমান ছিল ইস্পাত কঠিন। রাসূলের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তারা দেশ ছেড়েছেন, সুন্দর সুন্দর বাড়ি-ঘর ছেড়ে যাযাবর হয়েছেন। জীবনের সব স্বাদ-আহলাদ কোরবানি দিয়েছেন; শুধু ইসলামের জন্য। অথচ আমরা সামান্য ক্ষতির আশংকায় বিকল্প পথ খুঁজি। আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন শরিফের সূরা আনকাবুতে-২৩ বলেন, ‘মানুষ কি মনে করে নিয়েছে যে, আমরা ঈমান এনেছি কথাটুকু বললেই তাদের ছেড়ে দেয়া হবে, আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না। অথচ আমি তাদের পূর্ববর্তীদের সবাইকে পরীক্ষা করে নিয়েছি। আল্লাহতায়ালা অবশ্যই দেখবেন কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যুক। একজন মানুষ যখন অন্তর দিয়ে বলে, ‘লা ইলাহা ইল্লাাল্লাহতখন সে সব মিথ্যা উপাস্যকে বর্জন করে কেবল এক আল্লাহর দাসত্বের প্রতিশ্রুতি দান করে। আবার যখনমুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহবলে তখন সে কথাটির সত্যতা স্বীকার করে যে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল। তাই আল্লাহ আল্লাহর রাসূলের নির্দেশিত পথ বাদে অন্য কোনো পথ সে গ্রহণ করতে পারে না। প্রয়োজনে নির্যাতন সহ্য করে ঈমানের বলে বলিয়ান হতে হবে। ক্ষেত্রে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের সাহায্য করা হয়। ঈমানের অগ্নি পরীক্ষা দিয়ে মুসলমানকে জান্নাতে প্রবেশ করতে হবে। অতীতেও আল্লাহ তাঁর বান্দাদের পরীক্ষা করেছিলেন। সুরা দুখানের ৩৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন এবং ওদের দিয়েছিলাম নির্দেশনাবলী যাতে ছিল সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে আহসানুল বয়ানে লেখা হয়েছে, এতে মুসা (.)কে দেয়া মুজিজা সম্পর্কে বলা হয়েছে। সেখানে পরীক্ষার দিক এই ছিল যে, মহান আল্লাাহপাক দেখতে চেয়েছিলেন, তারা কিভাবে আমল করে। যারা মাদ্রাসা থেকে দ্বীনি শিক্ষা লাভ করে বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছেন তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। দুনিয়ার কাউকে খুশি করার জন্য ওহির জ্ঞানকে গোপন করা যাবে না, মিথ্যের সঙ্গে আপস করা যাবে না। যারা ইলম অর্জন করে তা আমল করেনি কেয়ামতের দিন তাদের ভিষণ শাস্তি হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠে আবার রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি দ্বীনে দাখিল থাকবেন। কারণ ইসলাম একটি সার্বিক জীবন ব্যবস্থা। কেউ যদি বাড়িতে ইসলাম মানে কিন্তু অফিসে গিয়ে কাজ-কর্মের ক্ষেত্রে ইসলামের কথা ভুলে যায় তাহলে তাকে ভুলের খেসারত দিতে হবে। সব কাজ আল্লাহকে ভয় করে করতে হবে। তা না হলে আমরা আখেরাতের পরীক্ষায় পাস করতে পারব না। আল্লাহতায়ালা সত্য-মিথ্যার পরীক্ষা করবেন। আল্লাহ বলেন, আমি তাদের পূর্ববর্তীদের পরীক্ষা করেছি যাতে আল্লাহর সঙ্গে যারা সত্য বলেছে তাদের স্পষ্ট করে দেন এবং যারা মিথ্যা বলেছে তাদেরও স্পষ্ট করে দেন। (সূরা আল আনকাবুত -) আল্লাহ জান মালের পরীক্ষা নেন। পরীক্ষায় ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় তোমাদের পরীক্ষা করা হবে। তোমাদের ধনসম্পত্তি তোমাদের লোকজনের মাধ্যমে আর নিঃসন্দেহ তোমরা শুনতে পাবে, তোমাদের আগে যাদের গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদের থেকে এবং যারা শরীক করে তাদের থেকে আর আমরা নিশ্চয় তোমাদের পরীক্ষা করব ক্ষুধা দিয়ে, আর ফল-ফসলের লোকসান করে। আর সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের (আল বাকারা ১৫৫) আমরা মানুষের সঙ্গে টাকা-পয়সা লেনদেন করছি, বাজারের জিনিসপত্র বেচাকেনা করছি, নিজের ঘরে মা-বাবা, ভাই-বোনের সঙ্গে বাস করছি, নিজের স্ত্রী, বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে চলাফেরা করছি। আমরা যদি জীবনের সব কাজে আল্লাহর বিধি-নিষেধ আইন-কানুন মেনে চলি এবং আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী যদি অপরের অধিকার রক্ষা করে চলি এবং আল্লাহর নিষেধ হওয়ার কারণে যদি অপরের অধিকার হরণ থেকে বিরত থাকি তাহলে আমাদের সারা জীবনই আল্লহর ইবাদতে অতিবাহিত হল বলতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যদি আমি গরিবদের সাহায্য করলাম, অভুক্ত মানুষকে খেতে দিলাম, কোনো অসহায় রোগীর সেবা করলাম সেগুলো ইবাদতের কাজ বলে গণ্য হবে। এভাবে সারা জীবন অতিবাহিত করতে পারলে আমরা আখিরাতের পরীক্ষায় সফলকাম হব।

লেখক : প্রভাষক, সাংবাদিক ধর্মীয় গবেষক মমিনুল ইসলাম মোল্লা    |    প্রকাশ : ২২ এপ্রিল, ২০১৬






শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.