আলী আশরাফ সভাপতি মমিনুল ইসলাম সিনিয়র সহ-সভাপতি
নিচিচা কুমিল্লা জেলা ৪১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন
সম্পন্ন
মুরাদনগর ( কুমিল্লা)থেকে মমিনুল ইসলাম মোল্লা
আজ ৮ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে নিচিচা কুমিল্লা জেলা ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে।
কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত সংগঠকদের নিয়ে ১ বছর মেয়াদি এই কমিটি গঠন করা হয়।
কুমিল্লা জেলা কমিটির আহ্বায় মো. আলী আশরাফ খানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নিরাপদ চিকিৎসা চাই কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, ডাঃ মোঃ মমিনুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সিটি হসপিটালের স্বত্বাধিকারী মোঃ ওমর ফারুক পারভেজ।
পরে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিতে
দাউদকান্দি উপজেলার মো. আলী আশরাফ খানকে-সভাপতি;
মুরাদনগর উপজেলার মোঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লাকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, বুড়িচং উপজেলার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবিরকে সহ-সভাপতি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সৈয়দ আহমেদ লাভলুকে সহ-সভাপতি, দেবিদ্বার উপজেলার এ্যাড. জহির রায়হানকে সহ-সভাপতি, নাঙ্গলকোট উপজেলার এ্যাড. কাজী নূরে আলম সিদ্দিকীকে সহ-সভাপতি, দেবিদ্বার উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানকে সহ-সভাপতি, তিতাস উপজেলার মোঃ মাহবুব সরকারকে সহ-সভাপতি, নাঙ্গলকোট উপজেলার মোঃ শাহআলম মুন্সিকে সহ-সভাপতি;
তিতাস উপজেলার মোঃ হালিম সৈকতকে-সাধারণ সম্পাদক, দাউদকান্দি উপজেলার মোহাম্মদ এখলাছুর রহমান মুন্সীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চান্দিনা উপজেলার মোঃ জাকির হোসেন সরকারকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা সদরের আব্দুল আওয়াল সরকারকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা সদরের মোঃ আবু বকরকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক;
বুড়িচং উপজেলার কাজী মোঃ খোরশেদ আলমকে সাংগঠনিক সম্পাদক-১, তিতাস উপজেলার মোঃ শরিফুল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক-২, দাউদকান্দি উপজেলার মোঃ নুরুন্নবীকে সাংগঠনিক সম্পাদক-৩; কুমিল্লা সদর দক্ষিণের মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব শিশিরকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক,
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মোহাম্মদ আজিম হোসেনকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক,বরুড়া উপজেলার মোহাম্মদ রাকিব হোসেন রাকিবকে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক;
দাউদকান্দি উপজেলার মোঃ সফিউল বাশার সুমনকে আইটি বিষয়ক সম্পাদক;
দাউদকান্দি উপজেলার মোঃ কামরুল হক চৌধুরীকে প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক, মনোহরগঞ্জ উপজেলার মোঃ মাসুম বিল্লাহকে সহ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক;
দাউদকান্দি উপজেলার মোঃ আবু তাহের নয়নকে কোষাধ্যক্ষ, তিতাস উপজেলার মোহাম্মদ তৈয়ব আলীকে সহ-কোষাধ্যক্ষ;
লাকসাম উপজেলার মোঃ রাসেল হোসেন নয়নকে ক্রীড়া সম্পাদক;
কুমিল্লা সদরের হাজী আব্দুর রব মাস্টারকে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, তিতাস উপজেলার মোঃ হাসানকে সহ-ধর্মবিষযক সম্পাদক;
কুমিল্লা সদরের জোনাকী মুনশীকে মহিলা বিষয় সম্পাদক, দাউদকান্দি উপজেলার রাজিয়া সুলতানাকে সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক;
কবি আহমেদ উল্লাহ-হোমনা, মোঃ আলমগীর হোসেন-দাউদকান্দি, মোঃ সেলিম সবুজ-তিতাস,
মোঃ সিরাজুল ইসলাম সুপ্ত-হোমনা, রঞ্জন চন্দ্র দাস-তিতাস,আলমগীর হোসেন-তিতাস,
সজীব সরকার বাবু-দাউদকান্দি, বশির আহমেদ-তিতাস, আল-আমিন-তিতাস,
মোস্তাফিজুর রহমান পলিন-চান্দিনা ও
সাইফুল ইসলাম -বিপাড়াকে সদস্য করে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন অতঃপর প্রকাশ করা হয়।
এসময় প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'নিচিচা একটি সামাজিক সংগঠন। এই সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রটিকে আমুল পরিবর্তন করা। সুতরাং এই গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই আমরা সকলে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে যাবো'। তিনি আরও বলেন, 'কুমিল্লা জেলা কমিটিকে, কেন্দ্রীয় কমিটি সব সময় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আপনারা কাজ করুন, সফলতা আসবে-ইনশাল্লাহ'।
নবনির্বাচিত সভাপতি বলেন, 'আমাদের উপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, তা পালনে সর্বাত্মকভাবে প্রচেষ্টা করবো আমরা। আমরা চাই, সত্যের উপর দাঁড়িয়ে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে।
আর এই অঙ্গিকার নিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যাবো-ইনশাআল্লাহ।

অজুর বরকত ও আমল
গাজী মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির
অজু ছাড়া নামাজ হয় না। তাই নামাজে দণ্ডায়মান হওয়ার আগে অজু করতে হয়। কোরআনে পাকে ইরশাদ হচ্ছে , ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করো এবং দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত করো’ (সূরা মায়িদাহ : ৬)। অজুর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা এত নেয়ামত বরাদ্দ রেখে দিয়েছেন, যা শুনলে অনেকে হয়তো আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাবেন। হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো অজু’ (মুসনাদে আহমাদ-৩ : ৩৪০ পৃ.)।ইসলামী টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী (রহঃ)'র ৭ম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ
গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।।
বাংলাদেশে মূলত ইসলামের আগমন এবং মহান বার্তা এসেছে পীর- মুর্শিদ,অলি- আউলিয়ার মাধ্যমে। তারি ধারাবাহিকতায় এদেশে বহু ইসলামী চিন্তাবিদগণের জম্ম হয়েছে। আমরা এখন মিডিয়ার সুবাদে ইসলাম ধর্মের জটিল বিষয় সমূহের সমাধান পাচ্ছি ইসলামী চিন্তাবিদ ও বরেণ্য আলেম- ওলামাদের কাছ থেকে ইসলামের নানা বিষয় জানতে নিজের মোবাইল / ফোন থেকে একটা কল দিয়ে যে কেউ অজ- পাড়া গাঁও থেকে জানার সুযোগ পাচ্ছে। তবে, মিডিয়াতে ভ্রান্ত আকিদ্বার অনেক বিভ্রান্তিও ব্যাপক চলছে।সেই দিক থেকে সর্বজনবিদিত হাতে গুনা কয়েকজনের মধ্যে একজন ছিলেন,মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী রহঃ। তাকে গত ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের নিজ বাড়িতে খুন করা হয়। ওইদিন এশার নামাজের পর অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢুকে তার স্ত্রী ও এক ছেলেসহ তিন স্বজনের হাত-পা বেঁধে ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করে। ওই ঘটনায় পরে তার ছেলে ফয়সাল ফারুকী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি এখন সিআইডি তদন্ত করছে।নিহত ফারুকী চ্যানেল আইয়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘কাফেলা’ ও ‘শান্তির পথে’, মাই টিভির লাইভ অনুষ্ঠান ‘সত্যের সন্ধানে’র উপস্থাপক ছিলেন। এছাড়া তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পাদক এবং সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের খতিব ছিলেন।নিজ বাসায় দুষ্কৃতকারীদের হাতে খুন হওয়া আলেম ও টিভি উপস্থাপক শহীদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী রহঃ ছিলেন সুন্নি অঙ্গণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব।তিনি কোরআন - হাদীসের আলোকে মহান আল্লাহ প্রেরিত নবী -রাসূল,অলি- আউলিয়াগনের অনেক সাড়া জাগানো বিষয় চমৎকার ভাবে তোলে ধরতেন সরেজমিনে। তুলে এনেছেন তাদের সেই অজানা বিষয় গুলো, বর্ণনা করেছেন তাদের কারামত/ মুজেজা গুলো ক্যামেরা/ ভিডিও মাধ্যমে তা "কাফেলা" অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চ্যানেল আই ও "শান্তির পথ" অনুষ্ঠানে মাই টিভির মাধ্যমে। রমজান মাসে হযরত আদম আঃ-এর শ্রীলংকায় অবতরণের বর্ণনা, বেহেশত থেকে দুনিয়ায় নামলেন শ্রীলংকার এক উঁচু পর্বতে। সেখানে আদম আঃ - এর পায়ের চাপ এখনও সংরক্ষিত। অনেক ধর্মের লোকদের নিকট এটা সমাদৃত। এভাবে এই কাফেলায় দেখানো হয়, হযরত ইউসুফ আঃ - এর পরামর্শে মিশর সরকারের খাদ্য সংগ্রহ ও দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচার জন্য অগণিত খাদ্য গুদাম নির্মাণ। সেসব খাদ্য কয়েক বছর ছিল বিধায় গুদামে বাতাস ঢোকার জায়গাও ছিল।এসব গুদামের বর্তমান চিত্র তুলে এনেছিলেন সুনিপুণ মননে। সেই গুনি আলেম, শহীদ ফারুকী রহঃ হত্যার আজ ৭ বছর হল। হত্যাকান্ডের বিচার বা দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ;এটা বড় কষ্টের, দুঃখের বিষয়। দেশ ও প্রবাসের লক্ষ লক্ষ রাসুলপ্রেমিক সুন্নি জনতা চাপা কষ্ট বুকে নিয়ে বিচারের আশায় দিন গুনছে এখনো। তিনি ছিলেন,হাইকোর্ট মাজার মসজিদের খতিব, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত এর আন্তর্জান্তিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য। হজ্ব কাফেলারও নেতৃত্ব দিয়েছেন।টিভিতে দেশের সেরা মুফতি - মুহাদ্দেস, অধ্যক্ষদের নিয়ে ইসলামের জটিল কঠিন মাসয়ালা - মাসায়েলের চমৎকার সমাধান দেয়ার চেষ্টা করতেন। এমন একজন গুণী ইসলামী চিন্তাবিদ কে গলা কেটে এভাবে শহীদ করা কোন মুসলমান ও সুস্থ মস্তিষ্ক মানুষ করতে পারে না। এর প্রকৃত তথ্য, হত্যাকারিদের গ্রেফতার ও বিচার করা সরকারের আমলে নিয়ে দ্রুত শেষ করা লক্ষ কোটি তরিকতপন্থী- সুন্নি মুসলমানের প্রাণের দাবি। এ হত্যাকান্ডের নেপথ্যে কারা, তাও খুঁজে বের করা সময়ের বড় দাবী। মোট কথা, স্বচ্ছ তদন্ত দ্রুত বিচার এবং কঠিন শাস্তি দেশবাসী কামনা করে। টেলিভিশনে ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সর্বশেষ ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য ছিল আদালতে। গত ৪ মার্চ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী প্রতিবেদন দাখিলের নতুন ঐ দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত দিনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রাজীব ফরহান প্রতিবেদন দাখিল করেননি। এ নিয়ে মামলার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ৫২ বার পেছালো। লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী রহঃ হত্যাকান্ডের বিচারে আদৌ কি সরকারের সৎ ইচ্ছা আছে কিনা সর্বস্তরের সুন্নি মুসলমান জানতে চায়। তদন্ত বা বিচারের স্বার্থে সব ধরনের সহযোগিতায় নুন্নি জনতা প্রস্তুত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং সূফী দর্শনে বিশ্বাসী সরকার মানবতা বিরোধী, যুদ্ধ অপরাধীদের মত ; মাওলানা শহীদ নুরুল ইসলাম ফারুকী রহঃ এর হত্যারও বিচার করে দেশের অগণিত নবী-অলিপ্রেমিক,সুন্নি-সূফীপন্থী মানুষের হৃদয় জয় করুক এ প্রত্যাশা রাখি। শহীদ আল্লামা নুরুল ইসলাম ফারুকী রহঃ এর ৭ম শাহাদাত বার্ষিকীর এই দিনে। এদিকে, শহীদ নুরুল ইসলাম ফারুকী রহঃ এর শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচী পালন করছে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা'আত, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট,বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা ও ছাত্রসেনা।আজ ঢাকা,চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ,চাঁদ পুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারাদেশে এ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও দোয়া, মিলাদ মাহফিল এবং বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
সাংবাদিক হাবিব জালাল স্মরণে মমিনুল ইসলাম মোল্লা

হঠাৎ একদিন চোখে পড়ল আমার একটি লিখা ৪৫ লক্ষ লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কথায় কথায় মুরাদনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাবিব সাহেবের কাছে কথাটা বল্লাম। উনি বল্লেন , মোল্লা ভাই আপনার একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিয়ে দিয়েন। আমি কুমিল্লার একটি পত্রিকায় দিয়ে দেব। আমিও তাই করলাম। লিখাটি ছাপা হলো কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত “ দৈনিক ডাক প্রতিদিন “ পত্রিকায়। হাবিব ভাই ( মুরাদনগরের) পতত্রিকা এনে দিবেন বল্লেও ব্যস্ততার কারণে যেতে পারেন নি। তাই নিজেই গেলাম কুমিল্লা।
পত্রিকার স্টলগুলোতে না পেয়ে অবশেষে কান্দিরপাড়স্থ ডাক প্রতিদিন পত্রিকার অফিসে গেলাম।। সেখানেই প্রথম দেখা উক্ত পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাবিব জালালের সাথে।পুরনো পত্রিকার স্টক থেকে পত্রিকা পত্রিকাটি নামিয়ে এনে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লিখাটি পড়লেন। লিখাটির শিরোনাম ছিল “ ৪৫ লাখ পাঠকের ভলোবাসায় মমিন মোল্লা “ । তিনি বল্লেন, একটি লিখা এত বেশি লোকে পড়েছে সেটি অবাক হওয়ার মতো ঘটনা। পরে লিখাটির লিংক এ প্রবেশ করে দেখলনে ইতিমধ্যে ৪৫ লাখ এর উপরে চলে গেছে এর পাঠক সংখ্যা ।লিখাটির মূল শিরোনাম ছিল ” হালাল উপায়ে ব্যবসা ও মুনাফা লাভ “। ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের “ ইসলাম ও অর্থনীতি “ পাতায় লিখাটি প্রথম ছাপা হয়েছিল। পরবর্তীতে অবশ্য কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়। হাবিব জালাল ভাই চা খাইয়ে আামাকে বিদায় দিলেন। তিনি বিদায় নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। জানিনা আমাদের ডাক কবে চলে আসবে ? আল্লাহ আমাকে এবং আপনাদেরকে মুসলমান হিসাবে কবুল করুন। আমিন। আমিন। ছুম্মা আমিন
তাশাহ্হুদে বসে শাহাদাত আঙ্গুল একবার উঠানাে ।
নফল নামাজ “ মনগড়া“ নয়
নফল নামাজ “ মনগড়া“ নয়
জানাবত থেকে ঃ গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা লাভ
The arrival of Imam Mahdi and the protection of Dajjal from the fitnahইমাম মাহদীর আগমন ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা
কিয়ামতের আগে দুনিয়াতে বেশ কিছু ফেৎনার উদ্ভব ঘটবে। এসময় অন্যায়-অত্যাচার মানুষের স্বভাবে পরিণত হবে। সমাজের অনিষ্ট সাধনকারী ব্যক্তিদের হাতে কর্তত্ব চলে আসবে। এসময় মুমিনগণ নতুন প্রভাতের আশায় থাকবেন। মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ ( ইমাম মাহদীর) মাধ্যমে আল্লাহ পাক মুসলমানদের আবার একত্রিত করবেন। ইমাম মাহদীর সহযোগীতায় তারা আবার অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জয়ী হবে। ইমাম মাহদীর আগমন কেয়ামতের বড় আলামতগুলোর মধ্যে প্রথম । (ইবনে মাসউদ রাঃ) থেকে বর্ণিত , নবি করিম (সাঃ) বলেন, “ পৃথিবীর জীবনসায়াহ্নে যদি একটি মাত্র দিন অবশিষ্ট থাকে, তবে সেই দিনটিকে আল্লাহ দীর্ঘ করে আমার পরিবারস্থ একজন ব্যক্তিকে প্রেরণ করে ছাড়বেন। তার নাম আমার নাম এবং তার পিতার নাম একই রকম হবে। (তিরমিজি, আবু দাউদ) মাহদী হবেন নবি করিম (সাঃ) এর বংশধর। এক রাত্রিতে আল্লাহপাক তাকে নেতৃত্বের যোগ্য বানিয়ে দেবেন। অর্থাৎ তিনি আগে থেকে তা জানতে পাবেন না। ইমাম অন্য হাদিছে বলা হয়েছে তিনি হবেন ফাতেমা (রাঃ) এর সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত হবে। মাহদীর গায়ের র্ঙ উজ্জল , নাক হবে দীর্ঘ এর সামনের অংশ কিছুটা সরু এবং মধ্যমভাগ কিছুটা ফোলা তবে একবা েচেপ্টা হবে না। অবিচার যখন স্বভাবে পরিণত হবে, ন্যায় নিষ্ঠা সমাজ থেকে উঠে যাবে, মুসলিম সমাজ বেহায়াপনা ও অশ্লীলতায় ছেয়ে যাবে তখন আল্লাহ ইসলাম ধর্ম পুনরুদ্ধারের ব্যস্থা করবেন। উম্মতে মোহাম্মদীর কাছে তিনি ইমাম মাহদী নামে পরিচিতি পাবেন। আবু সাঈদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবি করিম (সাঃ) বলেন, আমি তোমাদেরকে মাহদীর সুসংবাদ দিচ্ছি। ভূকম্পন ও মানুষের বিভেদকালে তার আগমন ঘটবে। ন্যায়- নিষ্ঠায় পৃথিবী ভরে দেবে ঠিক যেমন অন্যায়-অবিচারে ভরে গিয়েছিল।
ইমাম মাহদী যে রাসুল (সঃ) এর বংশধর হবেন এ ব্যাপারে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাই অন্য কোন যায়গা থেকে কেউ যদি মাহদী দাবী করেন তাহলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না। আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন. ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবেনা যতক্ষণ না আরবদের বাদশা আমার বংশের এক ব্যক্তি হবে। আর তার নাম ও আমার নামের অনুরূপ হবে (তিরমিজি) । ইবনে কাছির (রাঃ) বলেন, মাহদীকে প্রাচ্যের নিষ্ঠাবান একটি দলের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হবে। তারা মাহদীকে সহায়তা করবে এবং মাহদীর রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। তাদের পতাকা হবে কাল বর্ণের। নবী করিম (সাঃ) এর পতাকাও ছিল কালো। এর নাম ছিল উকাব। ইমাম মাহদীর মাধ্যমে সম্পদের সুষম বন্টন হবে। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন ন্যায়ের মাধ্যমে উম্মতে মোহাম্মদীকে পূর্ণ করে দিবেন। এমনকি একজন ঘোষণা করবে-কারো কি সম্পদের প্রয়োজন আছে ? একজন তার প্রয়োজনের কথা বল্লে দায়িত্বশীল বলবে- উঠাও যা পার। আচল ভরে স্বর্ণ -রৌপ্য উঠাতে চাইলে লজ্জিত হয়ে বলবে- আমি নিজেকে সবার চেয়ে শক্তিশালী মনে করতাম কিন্তু আজ এগুলো বহন করতে অপারগ হয়ে গেছি। ” ইমাম মাহদীর আগমনের পর তিনি নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠায় মনহযোগী হবেন। অন্যায় অবিচারের পরিবর্তে আবার ধমর্ীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। মুসলিম বিশ্ব সুখ-স্বাচ্ছন্দ ভরে উঠবে। সকল খনিজ সম্পদ প্রকাশ পাবে। আকাশ থেকে ফসলের উপযোগী বৃষ্টি বর্ষণ হবে।
ত্ববরানী থেকে জানা যায়, ক্ষমতাশীল খলিফার মৃত্যুর পর খলিফা নির্বাচনে লোকদের মধ্যে মতভেদ শুরু হবে। এমতাবস্থায় ইমাম মাহদীর আগমন ঘটবে লোকের হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইব্রাহিমের মাঝে তার কাছে বায়াত হবে। সিরিয়া থেকে একদল সৈন্য মক্কা আক্রমনের জন্য আসবে। এরপর ইরাক ও সিরিয়া থেকে বড় বড় ওলামাগন ইমাম মাহদীর হাতে বাইয়াত গ্রহণের জন্য আসতে থাকবে। মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে আয়শা (রাঃ) বলেন- একদা রাসুল (সাঃ) ঘুমের ঘোরে এলোমেলো কিছু কাজ করলেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, জাগ্রত হলে আমরা তাকে বল্লাম, ঘুমের মধ্যে আজ এমন কিছু কাজ করেছেন যা অতীতে কখনও করেন নি। তিনি বলেন আমার উম্মতের একদল লোক কাবার পাশে অংশগ্রহণকারী কুরাইশ বংশের একজন লোকের বিরদ্ধে যুদ্ধ করার উদ্ধেশ্যে রওয়ানা হবে। তারা বারদা নামক স্থানে পৌঁছবে তখন তাদেরকে নিয়ে জমিন ধসে যাবে। তখন রাস্তায় নানা ধরণের লোক থাকবে। নবি করিম (সাঃ) বলেন, তাদের ভিতর এমন লোক থাকবে যারা নিজেদেরকে গোমরাহ জেনেও বের হবে। কাউকে বল প্রয়োগ করে আনা হবে এবং তাদের মধ্যে মুসাফিরও থাকবে। তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে সকলকেই আল্লাহর নিয়তের উপর পুনরুত্থিত করবেন। হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, কাবায় এমন কিছু লোক অশ্রয় গ্রহণ করবে যাদের হাতে শত্রু মোকাবেলা করার মত কোন কিছু থাকবে না। তাদের সংখ্যাও কম হবে। আর তাদের হাতিয়ার ও থাকবে কম। একটি সেনাদল তাদের উপর আক্রমন করার জন্য বাইদা নামক স্থানে পেঁৗছলে সেখানে তাদেরকে মাটিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে ( মুসলিম)। আবু দাউদ শরিফের হাদিস অনুযায়ী ইমাম মাহদী ৭ বছর রাজত্ব করবেন। কোন কোন হাদিসে ৮ অথবা ৯ বছরের কথাও বলা হয়েছ। কেয়ামতের আগে নির্দিষ্ট সময়ে ঈসা (আঃ) আবার পৃথিবীতে অবতরণ করবেন। বুখারি শরিফে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবি করিম সাঃ বলেন- “ কেমন হবে যখন তোমাদের মাঝে মরিয়ম তনয়া ঈসা অবতরণ করে তোমাদেরই একজনের পেছনে ফজরের নামাজ আদায় করবেন। সহি হাদিছ অনুযায়ী জানা যায়- ঈমাম মাহদীর সময় মুসলমানদের ইমাম ও শক্তি ধ্বংস করার জন্য দাজ্জালের আগমন ঘটবে। দাজ্জালের মোকাবেলা করার জন্য আল্লাহপাক ইসা (আঃ ) কে পাঠাবেন। ইমাম মাহদী ও ইসা (আঃ) একত্রে মুসলমানদেরকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্ত করবেন।
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক , সাংবাদিক ও ধমর্ীয় গবেষক, কুমিল্লা।

মুসলিম পিতার প্রথম দায়িত্ব আকিকা করা
পৃথিবী জুড়ে প্রতিদিন মুসলমান নারীদের কোলে আসছে নতুন অতিথি। সদ্য ভূমিষ্ট এ অতিথিদের ব্যপারে আমরা কতটুকু ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করি ? সন্তানের জীবনের শুরুটাই যদি বিধর্মীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী হয় তাহলে তার সারা জীবন কীভাবে কাটবে ? সে কী প্রকৃত মুমিন হয়ে পিতা-মাতার জন্য দোয়া করবে ? মুসলমান পিতা-মাতা হিসেবে নবজাত সন্তানের প্রতি আমাদের কিছু কর্তব্য রয়েছে। প্রথমেই তার ডান কানে আযান দিতে হবে। একটি সুন্দর ইসলামী নাম রাখতে হবে। প্রথমদিনেই সেটি করা যেতে পারে। রাসূল (সাঃ) বলেন , আজ রাতে আমার ১টি সন্তান ভূ ’মিষ্ট হয়েছে । আমি তাঁর নাম রেখেছি “ইব্রাহিম ” ; আমার পিতা ইব্রাহিমের নাম অনুযায়ী। ( মুসলিম )। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি তার সন্তানের আকিকা করতে চায় সে যেন উহা পালন করে। ( আহমাদ ও আবু দাউদ)। বুয়াদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ বলেন- ৭ম দিন অথবা ১৪তম দিন অথবা ২১তম দিন আকিকা কর ( তিরমিজি )। আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে, “৭ম দিন আকিকা করতে না পারলে যে কোন দিন করা যাবে। তবে কেউ যদি সপ্তম দিবসের প্রতি খেয়াল রেখে আকিকা করতে চায় তাহলে সে জন্মদিনের আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার জন্মদিন হলে তার আগের দিন বুধবার আকিকা করলেও চলে ”এ ধারণার কোন ভিত্তি নেই।
আকিকা অর্থ আল্লাহর দরবারে নজরানা পেশ করা, শুকরিয়া আদায় করা। আকিকা একটি ইবাদত। সন্তানের আগমনে খুশী হয়ে সেটি করা হয়। এর ফলে বাচ্চা বন্ধকমুক্ত হয় এবং পিতামাতার সুপারিশ করার উপযুক্ত হয়। এটি জানের সদকাহ। ইসলামি পরিভাষায় আকিকা হচ্ছে নবজাতকের পক্ষ থেকে পশু জবেহ করা। কোন কোন আলেম একে সুন্নাতে মোয়াক্কদা বলেছেন। সন্তান আগমনকে সব সময় সুসংবাদ হিসেবে দেখা হয়। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে “ অতঃপর ফেরেস্তারা তাকে ডেকে বলল (সে যখন কক্ষে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেছিল।) নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে ইয়াহ্ইয়া সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছেন (সূরা আল ইমরানঃ ৩৯)। অন্য এক আয়াতে আছে “ হে জাকারিয়া আমি তোমাকে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি । তার নাম ইয়াহ্হিয়া। ইতিপূর্বে কাউকে আমি এ নাম দেইনি ( সুরা মরিয়ম-৭)। অতএব দেখা যায় সন্তান জন্মে খুশি হওয়া ,আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা, বড় সওয়াবের কাজ।
আকিাকর পশু কী হবে এব্যপারে আমাদের সমাজে কিছু বিতর্ক রয়েছে। উম্মে কুরুজ আল কাবিয়া বলেন- আমি রাসূলুল্লাহ ( সাঃ ) কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছি , তিনি বলেন - ছেলের পক্ষ থেকে ২টি আর মেয়ের পক্ষ থেকে ১টি পশু নর-মাদি যে কোন প্রকার হলেই চলে; এত কোন সমস্যা নেই ( আবু দাউদ, নাসয়ি) । হযরত আয়েশা রাঃ পশু হিসেবে বকরী জবেহ করার কথা বলেছেন। ( আবু দাউদ)। আকিকার মাংস রান্না কওে পরিবারের লোকজন , বন্ধু- বান্ধব ও আত্মীয় স্বজন খেতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে উপঢৌকন পাবার আশায় গরীবদেরকে বাদ দিয়ে ধনী লোকদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়ালে আকীকার ফায়দা হাসিল হবে না। কেননা ঐ ধরণের ভোজসভা নিকৃষ্ট যেখানে গরীবদেরকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। হযরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন আকিকার মাংস নিজেরাও খাবে এবং সদকাহ ও করবে। এ পশুর চামড়ায় বিক্রয়লব্দ টাকা গরীব মিসকিনদের দান করে দেবে। আকিকার গোস্ত কাঁচা বা রান্না করে খাওয়ানো যায় ( বোখারী )। এ মাংস যার নামে আকিকা হচ্ছে সে নিজে এবং তার পিতা-মাতাও খেতে পারবেন। আকিকা করার সময় সাদকাহ করা উত্তম। হযরত আনাস রাঃ হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাঃ ৭ম দিন হাসান ও হুসাইন এর চুল কাটার নির্দেশ দেন। এবং চুলের ওজন পরিমাণ রৌপ্য সদকা করেন। পিতা অসমর্থ হলে চাচা বা মামা অথবা অন্য কেউ আকিকা করতে পারেন। তবে ইয়াতিম সন্তানের আকিকা তার সম্পদ থেকে দেয়ার ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কেউ আকিকা দিতে অক্ষম হলে সে গোনাহগার হবে না। কেননা আল্লাহতায়ালা কারও সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেননা। (সূরা বাকারা- ২৮৬)
আকিকার দ্বারা বিভিন্ন প্রকার বালা মুসিবত ও বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আকিার গুরুত্ব অনেক। সালমান (রাঃ ) থেকে বর্ণিত রাসূল ( সাঃ ) বলেন- বাচ্চার সঙ্গে আকিকার দায়িত্ব রয়েছে। সুতরাং তার পক্ষ থেকে আকিকা কর এবং তার শরীর থেকে কষ্টদায়ক জিনিস দূর করে দাও। ( বুখারী )। সামুরা রাদিয়ল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নবীজী বলেন- প্রত্যেক সন্তান তার আকিকার বিনিময়ে বন্ধক হিসেবে রক্ষিত। অতএব সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে আকিকা কর, তার চুল কাট ও নাম রাখ ( আহমদ, তিরমিজি )।
সন্তানের আকিকা দেয় একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। আমাদের সমাজে দেখা যায় আধুনিক পদ্ধতিতে সন্তান প্রসব করাতে গিয়ে বহু টাকা খরচ করা হয়। কিন্তু কয়েক হাজার টাকা খরচ করে আকিকা দেয়ার কথা অনেকেরই মনে থাকে না। এছাড়া কুরবানির সাথে শরীক হিসেবে আকিকা দেয়ার একটি সিস্টেম চালু আছে যা সহীহ হাদিসভিত্তিক নয়। হযরত মুহাম্মদ সাঃ কখনও কুরবানীর সাথে আকিকা দিয়েছেন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। নবীজী নিজের আকিকা নিজে দিয়েছেন ( তাই সন্তান বড় হলে সে ও নিজেরটা দিতে পারবে )বলে যে রেওয়াজ চালু আছে তাও দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়। আমরা যেন সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নবীজীর তরীকা মোতাবেক আকিকা দিতে পারি; আল্লøাহ আমাদেরকে সে তৌফিক এনায়েত করুন। আমিন।
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, প্রভাষক , সাংবাদিক ও ধর্মীয় গবেষক, কুমিল্লা।

Blessings at Rahimpur orphanage on the birth anniversary of Bangabandhu বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে রহিমপুর এতিমখানায় দোয়া
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রহিমপুর হেজাজীয়া এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদরাসার উদ্যোগে এক দোয়া অনুষ্ঠান গতকাল দুপুরে মাদরাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।এতিমখানার তত্বাবধায়ক কাজী মোহম্মদ লোকমানের সভাপতিত্বে দোয়া পরিচালনা করেন মাদরাসার এবতেদায়ী প্রধান ও মসজিদের খতিব মাওলানা আমীর হোসেন।অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান সরকার, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান, কাজিয়াতল দক্ষিণপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের সহকারী আব্দুস সালাম, প্রকৌশলী আমিনুর রসুল, ইউপি সদস্য আলী আশরাফ, মাদরাসা কমিটির সদস্য আক্তার হোসেন ও ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম প্রমুখ।মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি কামনাসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগষ্টে নৃসংশ ভাবে খুন হওয়া শহীদ পরিবারবর্গ এবং আত্বীয় স্বজণের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। একই সাথে এফবিসিসিআই’র সাবেক দু’বারের সভাপতি আলহাজ¦ ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি’র সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।শামীম আহম্মেদ, মুরাদনগর:

Dua Mahfil on the occasion of the Quran and Bukhari in Khatam in Muradnagarমুরাদনগরে খতমে কোরআন ও বুখারী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল
According to Sahih Akida, two rak'ats of Salat দুই রাকাত সালাত পড়ার সহিহ আকিদা মোতাবেক বিবরণ
প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর সালাত আদায় করা ফরজ । রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , “ তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবেই সালাত আদায় কর।
সালাতে দাঁড়ানো, রুকু, সেজদা ও বৈঠকসহ নির্দিষ্ট নিয়মে সকল কাজ করতে হয় । সালাতের দৈহিক কাজের নিয়মসহ আমরা দু রাকাত সালাতের কাজের বিবরণ জানব।
দাঁড়ানো :
আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠচিত্তে দাঁড়িয়ে যাও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। কাতারে পরস্পরের মাঝের ফাঁকা বন্ধ করে কাঁধে কাঁধ, পায়ে পা মিলিয়ে কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর কথা রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন।সূত্র (মিশকাতুল মাসাবীহ - পর্ব-৪ )। সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় চোখ থাকবে সেজদার যায়গায়। স্বলাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নযর রাখা সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ,“যারা তাদের স্বলাতে আসমানের দিকে দৃষ্টি উঠায়, তারা অবশ্যই বিরত থাকবে, অথব তাদের দৃষ্টি হরণ করা হবে”। মুসলিম: (৪২৯)
কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানোঃ
মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ঘর সম্মুখে রেখে দাঁড়াবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِي ٱلسَّمَآءِۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبۡلَة تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَيۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ ١٤٤﴾[البقرة:144]
“আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। সূরা বাকারা: (১৪৪) মুসল্লিগণ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যে নফল অথবা ফরয স্বলাত আদায়ের ইচ্ছা করেছে, অন্তরে তার নিয়ত করবে ও মুখে الله أكبر “আল্লাহু আকবার” বলবে, এবং সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রেখে হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে উভয় হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে।রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যখন তুমি স্বলাতের জন্য দাঁড়াও, তাকবির বল”। বুখারি: (৭৯৩), মুসলিম: (৩৯৭)
হাত বাঁধাঃ
উভয় হাত নিচে নামিয়ে বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের পিঠ-কব্জি-বাহুর উপর রাখা। ওয়ায়েল ইব্ন হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমিরাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে স্বলাত আদায় করেছি, তিনি বুকের উপর বাম হাতের উপরে ডান হাত রেখেছেন”। সহিহ ইব্ন খুজাইমাহ: (১/২৪৩),এরপর সানা পড়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করুন। সুরা ফাতিহা শেষ হলে একটি সুরা অথবা তিনটি ছোট আয়াত, যা কমপক্ষে লম্বা একটি আয়াতের সমতুল্য হয় পড়ুন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৯৫)
রুকু করাঃ
আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, স্বলাত আরম্ভ করার সময় রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকুর জন্য তাকবির বলতেন ও রুকু থেকে মাথা উঠাতেন অনুরূপ হাত উঠাতেন, তবে সেজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তিনি অনুরূপ করতেন না। সূত্রঃ বুখারি, মিশকাত হাদিস ৭৯২, রুকু থেকে উঠে কওমার দোয়া শেষে সিজদায় লুটিয়ে পড়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখার ব্যাপারে অfবু হোরায়রা রাঃ থেকে একটি সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সূত্রঃ অfবু দাউদ হাদিস ৮৪০, মিশকাত হাদিছ/৮৯৯ অনচ্ছেদ ১৪
সেজদা করাঃ
সিজদা করার সময় বেশী বেশী দো‘আ পড়বে। সিজদায় কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়বে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪২)এ সময় দু’হাত ক্বিবলামুখী করে মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। হাঁটুতে বা মাটিতে ঠেস দিবে না। সিজদা লম্বা হবে ও পিঠ সোজা থাকবে। যেন নীচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে।হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী রাখবে। আবু হুমাইদ সায়েদি থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে:
«فإذا سجد وضع يديه غير مفترشٍ ولا قابضهما، واستقبل بأطراف أصابع رجليه القبلة»
“যখন সেজদা করবে উভয় হাতকে বিছিয়ে রাখবে না, আবার মুষ্টিবদ্ধ করেও রাখবে না, পাযের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী করে রাখবে”। হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে কিবলামুখী রাখবে।বুখারি: (৮২৮)
দুই সিজদার মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করাঃ
তাকবির বলে সেজদা থেকে মাথা উঠাবে । সিজদা থেকে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে ও ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে। এ সময় স্থিরভাবে বসে দো‘আ পড়বে। অতঃপর ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে ও দো‘আ পড়বে। যেমন কমপক্ষে ‘রবিবগফিরলী’ ২ বার বলা।[ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: “তিনি বাম পা বিছিয়ে রাখতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন”। মুসলিম: (৪৯৮) উভয় হাত রানের উপর রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্ন জুবায়ের তার পিতা থেকে মারফূ সনদে বর্ণনা করেন: “নবী (ﷺ) যখন বসতেন তখন তিনি দো‘আ করতেন এবং ডান হাত ডান রানের উপর ও বাম হাত বাম রানের রাখতেন”।মুসলিম: ১১৩-(৫৭৯) অথবা উভয় হাত হাটুর উপর রাখবে।
তারপর আল্লাহ আকবর বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে।দ্বিতীয় সিজদা শেষে তাকবির বলে মাথা উঠাবে এবং সামান্য সময় বসবে, যেটাকে জালসায়ে ইস্তেরাহা বলে। এতে কোন জিকির ও দোয়া নেই।তারপর মাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়াবে।
তাশাহুদঃ
দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে একবারই তাশাহুদ পড়তে হয়।এসময় বসার নিয়ম হচ্ছে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসবে, ডান পা খাড়া রাখবে এবং আঙ্গুলগুলো কিবলার দিকে রাখবে। বৈঠকের সময় বাম হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাঁটুর প্রান্ত বরাবর ক্বিবলামুখী ও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে এবং ডান হাত ৫৩-এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ রেখে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত শাহাদাত অঙ্গুলি নাড়িয়ে ইশারা করতে থাকবে। মুছল্লীর চোখ ইশারার বাইরে যাবে না। ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ার পরে দরূদ, দো‘আয়ে মাছূরাহ ও সম্ভব হ’লে বেশী বেশী করে অন্য দো‘আ পড়বে।
৩ বা ৪ রাকাত সালাত পড়ার নিয়মঃ
স্বলাত যদি তিন রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন মাগরিব অথবা চার রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন জোহর, আসর ও এশা। তাহলে দুই রাকাত পড়ার পর শুধু তাশাহুদ পড়বে, পা ও হাটুর সম্মুখভাগ এবং রানের উপর ভর দিয়ে তাকবির বলে দাঁড়াবে,আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমরের হাদিসে আছে: “যখন দু’রাকাত থেকে উঠবে উভয় হাত উঠাবে”। বুখারি: (৭৩৯),
শেষ বৈঠকঃ
৩ বা ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাজে দ্বিতীয় তাশাহুদে তাওয়াররুক করে বসবে। আবু হুমাইদ সায়েদির হাদিসে আছে: “যখন দ্বিতীয় রাকাতে বসবে, তখন বাম পায়ের উপর বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে। যখন শেষ রাকাতে বসবে, বাম পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া রাখবে ও নিতম্বের উপর বসবে”। বুখারি: (৮২৮) এটাই তাওয়াররুক বসা। এখানে পড়ার নিয়ম ২ রাকাত বিশিষ্ট নামারে শেষ বৈঠকের মত।
সালাম ফিরানোঃ
আমের ইব্ন সাদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখতাম, তিনি ডানে ও বামে আছ্ছালামু অঅলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরাতেন, এমন কি আমি তার গালের শুভ্রতা দেখতে পেতাম”। মুসলিম: (৫৮২)
জামায়াতে নামাজ পড়ার সময় মুক্তাদি ইমামের আনুগত্য করবে।আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন “আনুগত্য করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যখন সে দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় করে, তোমরাও দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় কর, যখন সে রুকু করে তোমরা রুকু কর, যখন সে উঠে তোমরাও উঠ, যখন সে সেজদা করে তোমরাও সেজদা কর, যখন সে বলে: سمع الله لمن حمده তোমরা বল: বুখারি: (৭৮৯), মুসলিম: (৩৯২)
শেষ কথাঃ
কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হ’লে বসে বা শুয়ে ইশারায় স্বলাত আদায় করবে।কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় স্বলাত মাফ নেই।বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক, লেখক ও প্রভাষক।
দুই রাকাত সালাত পড়ার সহিহ আকিদা মোতাবেক বিবরণ
প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর সালাত আদায় করা ফরজ । রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , “ তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবেই সালাত আদায় কর। সালাতে দাঁড়ানো, রুকু, সেজদা ও বৈঠকসহ নির্দিষ্ট নিয়মে সকল কাজ করতে হয় । সালাতের দৈহিক কাজের নিয়মসহ আমরা দু রাকাত সালাতের কাজের বিবরণ জানব।
দাঁড়ানো :
আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠচিত্তে দাঁড়িয়ে যাও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)। কাতারে পরস্পরের মাঝের ফাঁকা বন্ধ করে কাঁধে কাঁধ, পায়ে পা মিলিয়ে কাতার সোজা করে দাঁড়ানোর কথা রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন।সূত্র (মিশকাতুল মাসাবীহ - পর্ব-৪ )। সালাতে দাঁড়ানো অবস্থায় চোখ থাকবে সেজদার যায়গায়। স্বলাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নযর রাখা সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ,“যারা তাদের স্বলাতে আসমানের দিকে দৃষ্টি উঠায়, তারা অবশ্যই বিরত থাকবে, অথব তাদের দৃষ্টি হরণ করা হবে”। মুসলিম: (৪২৯)
কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানোঃ
মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ঘর সম্মুখে রেখে দাঁড়াবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِي ٱلسَّمَآءِۖ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبۡلَة تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَيۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ ١٤٤﴾[البقرة:144]
“আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। সূরা বাকারা: (১৪৪) মুসল্লিগণ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যে নফল অথবা ফরয স্বলাত আদায়ের ইচ্ছা করেছে, অন্তরে তার নিয়ত করবে ও মুখে الله أكبر “আল্লাহু আকবার” বলবে, এবং সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রেখে হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে উভয় হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে।রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যখন তুমি স্বলাতের জন্য দাঁড়াও, তাকবির বল”। বুখারি: (৭৯৩), মুসলিম: (৩৯৭)
হাত বাঁধাঃ
উভয় হাত নিচে নামিয়ে বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের পিঠ-কব্জি-বাহুর উপর রাখা। ওয়ায়েল ইব্ন হুজর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমিরাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে স্বলাত আদায় করেছি, তিনি বুকের উপর বাম হাতের উপরে ডান হাত রেখেছেন”। সহিহ ইব্ন খুজাইমাহ: (১/২৪৩),এরপর সানা পড়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করুন। সুরা ফাতিহা শেষ হলে একটি সুরা অথবা তিনটি ছোট আয়াত, যা কমপক্ষে লম্বা একটি আয়াতের সমতুল্য হয় পড়ুন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৯৫)
রুকু করাঃ
আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, স্বলাত আরম্ভ করার সময় রাসুলে আকরাম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠাতেন, যখন তিনি রুকুর জন্য তাকবির বলতেন ও রুকু থেকে মাথা উঠাতেন অনুরূপ হাত উঠাতেন, তবে সেজদা থেকে মাথা উঠানোর সময় তিনি অনুরূপ করতেন না। সূত্রঃ বুখারি, মিশকাত হাদিস ৭৯২, রুকু থেকে উঠে কওমার দোয়া শেষে সিজদায় লুটিয়ে পড়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখার ব্যাপারে অfবু হোরায়রা রাঃ থেকে একটি সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সূত্রঃ অfবু দাউদ হাদিস ৮৪০, মিশকাত হাদিছ/৮৯৯ অনচ্ছেদ ১৪
সেজদা করাঃ
সিজদা করার সময় বেশী বেশী দো‘আ পড়বে। সিজদায় কমপক্ষে তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ পড়বে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪২)এ সময় দু’হাত ক্বিবলামুখী করে মাথার দু’পাশে কাঁধ বা কান বরাবর মাটিতে স্বাভাবিকভাবে রাখবে। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। হাঁটুতে বা মাটিতে ঠেস দিবে না। সিজদা লম্বা হবে ও পিঠ সোজা থাকবে। যেন নীচ দিয়ে একটি বকরীর বাচ্চা যাওয়ার মত ফাঁকা থাকে।হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী রাখবে। আবু হুমাইদ সায়েদি থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে:
«فإذا سجد وضع يديه غير مفترشٍ ولا قابضهما، واستقبل بأطراف أصابع رجليه القبلة»
“যখন সেজদা করবে উভয় হাতকে বিছিয়ে রাখবে না, আবার মুষ্টিবদ্ধ করেও রাখবে না, পাযের আঙ্গুলগুলো কিবলামূখী করে রাখবে”। হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে কিবলামুখী রাখবে।বুখারি: (৮২৮)
দুই সিজদার মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করাঃ
তাকবির বলে সেজদা থেকে মাথা উঠাবে । সিজদা থেকে উঠে বাম পায়ের পাতার উপরে বসবে ও ডান পায়ের পাতা খাড়া রাখবে। এ সময় স্থিরভাবে বসে দো‘আ পড়বে। অতঃপর ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে ও দো‘আ পড়বে। যেমন কমপক্ষে ‘রবিবগফিরলী’ ২ বার বলা।[ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে: “তিনি বাম পা বিছিয়ে রাখতেন ও ডান পা খাড়া রাখতেন”। মুসলিম: (৪৯৮) উভয় হাত রানের উপর রাখবে। কারণ আব্দুল্লাহ ইব্ন জুবায়ের তার পিতা থেকে মারফূ সনদে বর্ণনা করেন: “নবী (ﷺ) যখন বসতেন তখন তিনি দো‘আ করতেন এবং ডান হাত ডান রানের উপর ও বাম হাত বাম রানের রাখতেন”।মুসলিম: ১১৩-(৫৭৯) অথবা উভয় হাত হাটুর উপর রাখবে।
তারপর আল্লাহ আকবর বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে।দ্বিতীয় সিজদা শেষে তাকবির বলে মাথা উঠাবে এবং সামান্য সময় বসবে, যেটাকে জালসায়ে ইস্তেরাহা বলে। এতে কোন জিকির ও দোয়া নেই।তারপর মাটিতে ভর দিয়ে দাঁড়াবে।
তাশাহুদঃ
দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে একবারই তাশাহুদ পড়তে হয়।এসময় বসার নিয়ম হচ্ছে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসবে, ডান পা খাড়া রাখবে এবং আঙ্গুলগুলো কিবলার দিকে রাখবে। বৈঠকের সময় বাম হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাঁটুর প্রান্ত বরাবর ক্বিবলামুখী ও স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে এবং ডান হাত ৫৩-এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ রেখে সালাম ফিরানোর আগ পর্যন্ত শাহাদাত অঙ্গুলি নাড়িয়ে ইশারা করতে থাকবে। মুছল্লীর চোখ ইশারার বাইরে যাবে না। ‘আত্তাহিইয়া-তু’ পড়ার পরে দরূদ, দো‘আয়ে মাছূরাহ ও সম্ভব হ’লে বেশী বেশী করে অন্য দো‘আ পড়বে।
৩ বা ৪ রাকাত সালাত পড়ার নিয়মঃ
স্বলাত যদি তিন রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন মাগরিব অথবা চার রাকাত বিশিষ্ট হয় যেমন জোহর, আসর ও এশা। তাহলে দুই রাকাত পড়ার পর শুধু তাশাহুদ পড়বে, পা ও হাটুর সম্মুখভাগ এবং রানের উপর ভর দিয়ে তাকবির বলে দাঁড়াবে,আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমরের হাদিসে আছে: “যখন দু’রাকাত থেকে উঠবে উভয় হাত উঠাবে”। বুখারি: (৭৩৯),
শেষ বৈঠকঃ
৩ বা ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাজে দ্বিতীয় তাশাহুদে তাওয়াররুক করে বসবে। আবু হুমাইদ সায়েদির হাদিসে আছে: “যখন দ্বিতীয় রাকাতে বসবে, তখন বাম পায়ের উপর বসবে ও ডান পা খাড়া রাখবে। যখন শেষ রাকাতে বসবে, বাম পা আগে বাড়িয়ে দিয়ে ডান পা খাড়া রাখবে ও নিতম্বের উপর বসবে”। বুখারি: (৮২৮) এটাই তাওয়াররুক বসা। এখানে পড়ার নিয়ম ২ রাকাত বিশিষ্ট নামারে শেষ বৈঠকের মত।
সালাম ফিরানোঃ
আমের ইব্ন সাদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে দেখতাম, তিনি ডানে ও বামে আছ্ছালামু অঅলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরাতেন, এমন কি আমি তার গালের শুভ্রতা দেখতে পেতাম”। মুসলিম: (৫৮২)
জামায়াতে নামাজ পড়ার সময় মুক্তাদি ইমামের আনুগত্য করবে।আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন “আনুগত্য করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে, যখন সে দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় করে, তোমরাও দাঁড়িয়ে স্বলাত আদায় কর, যখন সে রুকু করে তোমরা রুকু কর, যখন সে উঠে তোমরাও উঠ, যখন সে সেজদা করে তোমরাও সেজদা কর, যখন সে বলে: سمع الله لمن حمده তোমরা বল: বুখারি: (৭৮৯), মুসলিম: (৩৯২)
শেষ কথাঃ
কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হ’লে বসে বা শুয়ে ইশারায় স্বলাত আদায় করবে।কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় স্বলাত মাফ নেই।বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮
লেখকঃ মমিনুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক, লেখক ও প্রভাষক।

যাত্রাপুরে মাহফিল অনুষ্ঠিত ইসলাম মজলুমের জন্য, জালিমের জন্য নয়: — রুহুল আমীন
👑 বৃহস্পতিবার থেকে শুরু সোনাকান্দা দরবার শরীফের বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল 👑
👑 কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের দু’দিনব্যাপী ৮৭’তম ঐতিহাসিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল ২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বাদ জোহর থেকে শুরু হবে। ২৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বাদ ফজর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে। এ উপলক্ষে রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব শায়খুল হাদিস মাওলানা মোতালেব হোসাইন সালেহী, মাদরাসার মুফাচ্ছির মাওলানা রফিকুল ইসলাম ও ছানাউল্লাহ জেহাদী প্রমুখ।
![]() |
| ফাইল ছবি |
মাহফিল উপলক্ষে দরবার শরীফের পক্ষ থেকে ৬টি পেন্ডেল ছাড়াও আগত দূরবর্তী মেহমান বৃন্দের থাকা, খাওয়া, অজু, গোছল, টয়লেট ও গাড়ী পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের মেটংঘর থেকে শ্রীকাইল পর্যন্ত এবং নবীপুর থেকে শ্রীকাইল পর্যন্ত রাস্তা দু’টি যানযট মুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, অসুস্থ্য হয়ে পড়া রোগীদের জন্য বিশেষ ও দ্রুত চিকিৎসা সেবা প্রদান ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এতে দেশ-বিদেশের ওলামায়ে কেরাম ও বিভিন্ন দরবার শরীফের পীর ছাহেবগণ বয়ান করবেন। উক্ত মাহফিলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকের সমাগম হবার সম্ভাবনা রয়েছে। উক্ত মাহফিলে উপস্থিত থেকে দুনিয়া ও পরকালের অশেষ ছাওয়াব হাসিল করার জন্য দরবার শরীফের পীর, বাংলাদেশ তা’লীমে হিজবুল্লাহ’র আমীর অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। # #
কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
📖 বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেন কুমিল্লার এলাহাবাদের
![]() |
| বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেন কুমিল্লার এলাহাবাদের (প্রতিকী ছবি) |






